স্টেশনারী ব্যবসার আইডিয়া ২০২৪ : ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ।

আপনি কি স্টেশনারী ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চান ? তাহলে এ আর্টিকেলটা আপনার জন্য।

বেকারত্বের শহরে মিথ্যা চাকরির আশা না করে ব্যবসা করা উত্তম। ধন-সম্পদ বৃদ্ধির জন্য ব্যবসার বিকল্প আর কিছু নেই।

ব্যবসার মাধ্যমে আপনি দ্রুত সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছতে পারবেন। ছোট-খাটো একটি চাকরির জন্যও আপনাকে মামা-খালুকে টাকা দিতে হয়।

অথচ, আপনি এই ঘুষ না দিয়ে এই টাকা দিয়ে স্টেশনারি ব্যবসা করে আপনার পরিবার খুব ভালোভাবে চালাতে পারবেন।

সুতরাং, অহেতুক চাকরির পিছনে না ছুটে একটি স্টেশনারি ব্যবসা দিতে পারেন। একটা কথা মনে রাখবেন, কখনো কোন কাজকে ছোট বা খাটো করে দেখবেন না।

বহির্বিশ্বের উন্নতির অন্যতম কারণ হলো তারা কোন কাজকেই ছোট করে দেখে না। আর স্টেশনারি ব্যবসার ফলাফল দ্রুত লাভবান হওয়া যায়।

তাই আজ আমি আপনাদের সুবিধার্থে স্টেশনারী ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

পাশাপাশি ব্যবসা করার জন্য কি কি বিষয়ের লক্ষ্য রাখতে হবে সে বিষয়গুলো আলোচনা করব।

যাতে করে আপনি কোনক্রমে-ই ক্ষতির সম্মুখীন না হন। অতএব আপনাকে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়তে হবে।

তাহলে আপনি পরিপূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন এবংসমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন । চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

স্টেশনারী ব্যবসার আইডিয়া

স্টেশনারী ব্যবসার আইডিয়া ২০২৪

স্টেশনারি ব্যবসা এমন একটি ব্যবসা যেখানে ঝুঁকি একেবারেই কম। চলুন এবার আমরা স্টেশনারি ব্যবসায় দ্রুত লাভবান হওয়ার কিছু টিপস্ সম্পর্কে জেনে নিই।

  1. স্টেশনারি ব্যবসার পূর্ব পরিকল্পনা
  2. মূলধন
  3. জায়গা নির্বাচন করা
  4. দোকানে দৃষ্টি নন্দণীয় ফার্ণিচার করা
  5. মানসম্মত পণ্য রাখা
  6. নতুন নতুন পণ্য বেশি রাখা
  7. রিজার্ভ মাল রাখা
  8. গ্রাহক নির্বাচন করা
  9. গ্রাহকদের সাথে ভালো আচরণ করা
  10. দোকান সব সময় খোলা রাখা
  11. স্টেশনারি ব্যবসার সুবিধা

১, স্টেশনারি ব্যবসার পূর্ব পরিকল্পনা

অনেকে পূর্ব পরিকল্পনা না করে ব্যবসা শুরু করে পরে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। কারণ, যেকোন বিষয়ে শুরু করতে হলে আগে থেকে প্লান প্রোগ্রাম ছাড়া কখনো সফল হওয়া যায় না।

আপনি যে ব্যবসা করবেন, প্রথমে আপনাকে সেই ব্যবসা সম্পর্কে ভালোভাবে আইডিয়া নিতে হবে।

যেমন, ধরুন আপনি স্টেশনারি ব্যবসা করবেন। তাহলে আপনাকে পণ্য, বাজার, দাম, এবং গ্রাহক এই সব বিষয়ে আপনাকে পূর্ব থেকেই কমবেশি ধারণা রাখতে হবে। 

২, মূলধন

যে কোন ব্যবসা করতে হলে সব চেয়ে লক্ষনীয় বিষয় হলো আপনার মূলধন। আপনার মূলধন অনুযায়ী আপনার ব্যবসার লাভ আসবে।

সুতরাং, আপনার মুলধনের প্রতি একটু বেশি খেয়াল রাখতে হবে। বর্তমান দুনিয়াটাই টাকার উপর চলমান। টাকা ছাড়া এখন সব কিছুই অচল।

এক্ষেত্রে আপনি একটা স্টেশনারি ব্যবসা শুরু করতে হলে প্রায় ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা দ্বারা করতে পারেন। কারণ, সবার তো জানা আছে বর্তমানে সব কিছুই মূল্য চড়া। 

৩, জায়গা নির্বাচন করা

যে কোন ব্যবসায় লাভবান হওয়ার অন্যতম লক্ষণীয় বিষয় হলো, আপনি ব্যবসাটা কোথায় করবেন।

এজন্য জায়াগা নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আপনার খুব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আপনি চাইলে এই বিষয়ে অভিজ্ঞ লোকদের সাথে জায়গা নির্বাচন করা নিয়ে পরামর্শ করতে পারেন।

আপনার বিক্রয়ের পরিমাণ নির্ভর করে আপনার ব্যবসার জায়গা নির্বাচন করার উপর। এক্ষেত্রে আপনাকে যে বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রাখতে হবে তা নিচে দেওয়া হল-

  • আপনি যদি কোন স্কুল বা কলেজের সামনে দোকান দেন তাহলে আপনাকে দোকানে অবশ্যই খাতা, কলম, পেন্সিল, রাবার , স্কেল এবং স্টুডেন্টদের নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী রাখতে হবে। 
  • আপনি যদি কোন অফিস বা কম্পানির সামনে দোকান দেন তাহলে আপনাকে দোকানে অবশ্যই কম্পিউটার ও ফটোকপি করার যাবতীয় সামগ্রী রাখতে হবে। 
  • আপনি যদি কোন মসজিদের সামনে দোকান , তাহলে আপনাকে অবশ্যই দোকানে কিছু আতর , কিছু টুপি, আবার কিছু তসবিহ বা জায়নামাজের পাটি রাখতে হবে।

৪, দোকানে দৃষ্টি নন্দণীয় ফার্ণিচার করা

কাস্টমারদের কে আকৃষ্ট করতে হলে আপনাকে দোকানের ফার্ণিচার ভালো করতে হবে। কারণ, মানুষ সৌন্দর্যের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়।

মানুষের চোখ বা মন যেদিকে আকৃষ্ট হয়, মানুষ সেদিকেই কোন চিন্তা ভাবনা ছাড়াই সেদিকে চলে যায়। সুতরাং, কাস্টমার বাড়াতে হলে আপনাকে অবশ্যই দোকানের ফার্ণিচার সুন্দর করতে হবে।

৫, মানসম্মত পণ্য রাখা

আপনি যে এলাকায় স্টেশনারি দোকান দিবেন সে এলাকার অধিবাসী সম্পর্কে আপনার পূর্বে থেকেই ধারণা রাখতে হবে।

আপনি যদি উন্নত এলাকায় দোকান দেন, তাহলে আপনাকে সব সময় উন্নত মানের ব্রান্ডের মালামাল রাখতে হবে।

এবং সব সময় খাবার বা অন্যান্য মালামাল গুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আর আপনি যদি সাধারণ জনবসতিতে দোকান দেন ,

তাহলে আপনাকে দোকানে তাদের সাধ্য অনুযায়ী মালামাল রাখতে হবে। তবে, আবার খাবারের কোয়ালিটির দিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

৬, নতুন নতুন পণ্য বেশি রাখা 

মানুষ সব সময় নতুনত্বের ছোঁয়া পেতে চায়। কথায় বলে, “সব নতুন জিনিসই খুব মজাদার হয়”।

সুতরাং আপনাকে সব সময় নতুন জিনিস মার্কেটে আসার সাথে সাথে আশেপাশের দোকানের আগে আপনার দোকানে আনার চেষ্টা করবেন। তাহলে কাস্টমাররা আপনার দোকানে বেশি বেশি আসবে। 

৭, রিজার্ভ মাল রাখা

কখনো যেন এমন না হয় ,যে কোন কাস্টমার আপনার দোকানে এসে মাল না পেয়ে ফেরত চলে যায়। এজন্য আপনাকে দোকানে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাল রাখতে হবে।

কারণ, না পেয়ে ফিরে গেলে কাস্টমার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বরং যেন এমন হয়, যে অন্য দোকানে না পেয়ে আপনার দোকানে আসার পর মাল পায়। এমন হলে কাস্টমার বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

৮, গ্রাহক নির্বাচন করা

 যে কোন ব্যবসা উন্নতির জন্য গ্রাহক তথা কাস্টমার নির্বাচন করা। অর্থাৎ, আপনার দোকানে কোন ধরনের কাস্টমারদের আনাগোনা বেশি হয়।

তাদেরকে নির্বাচন করে আপনাকে দোকানে মালামাল আনতে হবে। যাতে করে দোকানে মালামাল পড়ে না থাকে। যেন দ্রুত বিক্রি করে লাভ অর্জন করতে পারেন। সুতরাং এই বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

৯, কাস্টমারদের সাথে ভালো আচরণ করা 

ব্যবসার ক্ষেত্রে কাস্টমার আপনার লক্ষী । সুতরাং তাদের সাথে তো অবশ্যই আপনাকে ভালো আচরণ করতে হবে।

কারণ, মানুষ যে মন ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে অর্জন করতে পারে না। সে মন ভালো আচরণের মাধ্যমে দ্রুত অর্জন করা সম্ভব।

আপনার দোকানে যেসব কাস্টমারদের বেশি আনাগোনা হয় । তাদের সাথে কথাবার্তার মাধ্যমে আপনাকে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। তাহলে তারা সব সময় আপনার দোকানে আসবে। 

১০, সব সময় দোকান খোলা রাখা

ব্যবসার সফলতা অর্জন করতে হলে আপনাকে সব সময় এক্টিভ থাকতে হবে। কারণ, আপনি যদি প্রায় সময় দোকান বন্ধ রাখেন , তাহলে আপনার কাস্টমার কমে যাবে।

তারা যখন আপনার দোকানে এসে একবার বন্ধ দেখে ফিরে যাবে । তখন দ্বিতীয়বার তারা আর আপনার দোকানে বন্ধ ভেবে আসবে না। এভাবে দিন দিন আপনার দোকানের কাস্টমার কমে যাবে।

১১ , স্টেশনারি ব্যবসার সুবিধা

অনেক সুবিধা রয়েছে ।

  • স্টেশনারা ব্যবসা শুরু করতে হলে আপনে পূর্ব কোন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই। তবে , স্টেশনারি ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
  • স্টেশনারি ব্যবসার মালামাল নষ্ট বা পচে যাওয়ার আশংকা কম। এজন্য এ ব্যবসায় ক্ষতির ও আশংকা কম থাকে।
  • স্টেশনারি ব্যবসা যেহেতু কোন সিজনাল ব্যবসার মতো না। সেহেতু এই ব্যবসার মালামালের প্রতি মানুষের সারা বছর চাহিদা থাকে। 
  • হঠাৎ পণ্যের মূল্য কমে যাওয়া। এর মাধ্যমে আপনি পূর্বে অল্প দামে ক্রয়কৃত মালে বেশি পরিমাণে লাভবান হতে পারবেন।
  • স্টেশনারি ব্যবসায় মুলধনের শতকরা প্রায় ২০-৩০ ভাগ অথবা তারও বেশি লাভ হয়ে থাকে।
  • স্টেশনারি জিনিসপত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার কোন ভয় থাকে না। 
  • স্টেশনারি ব্যবসার সাথে অন্য ব্যবসা করার সুযোগ পাওয়া যায়। যেমন, বিকাশ বা মোবাইল রিচার্জ ইত্যাদি। যার মাধ্যমে অনাহাসে আপনার দোকানের ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন।

স্টেশনারি আইটেম লিস্ট বাংলা

স্টেশনারি পণ্য তালিকা অনেক রয়েছে । নিচে কিছু তালিকা বললাম ।

  • বই
  • কলম
  • খাতা
  • পেন্সিল
  • কম্পিউটারের জন্য পণ্য
  • অফিস আদালতের জন্য নানান প্রয়োজনীয় পণ্য
  • ছোট বাচ্চাদের শিক্ষামূলক খেলনা

আরো পড়ুন : স্টেশনারি পাইকারি বাজার কোথায় কোথায় রয়েছে ?

উপসংহার

উপরে স্টেশনারী ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করলাম । স্টেশনারি ব্যবসা খুব লাভজনক একটা ব্যবসা। তবে, একটু সাবধানতা অবলম্বন করা আবশ্যক।

উপরোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রেখে আপনি স্টেশনারি ব্যবসায় শুরু করলে দ্রুত সফলতা অর্জন করতে পারবেন।

উন্নতির জগতে আপনি কেন পিছিয়ে থাকবেন। মিথ্যা চাকরির আশা না করে আপনি স্টেশনারি ব্যবসা করলে জীবনে সফল ব্যক্তিদের কাতারে দাঁড়াতে পারবেন।

স্টেশনারি দোকানে কি কি থাকে ?

বই , কলম , খাতা ,পেন্সিল , কম্পিউটারের জন্য পণ্য , অফিস আদালতের জন্য নানান প্রয়োজনীয় পণ্য ইত্যাদি থাকে ।

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment