পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসা করার নিয়ম ২০২৩: সম্পূর্ণ গাইডলাইন ।

আপনি কি পোল্ট্রি ফার্ম সম্পর্কে জানতে চান ? তাহলে আপনি সঠিক স্থানে এসেছেন। এই লেখাটি শুধু আপনার জন্য।

আমরা সবাই চাই দ্রুত উন্নতি। আমরা চাই অল্প সময়ে উন্নতির শিখরে পৌঁছতে। আমরা চাই সল্প পরিশ্রমে সফলতা অর্জন করতে।

আপনাকে সফলতা অর্জন করতে হলে পরিশ্রমটা একটু বাড়িয়ে দিতেই হবে। ব্যবসা অনেক প্রকার হতে পারে।

তবে, সবচেয়ে বেশি লাভজনক হবে পোল্ট্রি ফার্ম। কারণ, এতে রয়েছে একের ভিতর দুই।

তাই আজ আমি আপনাদের পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

পাশাপাশি এই ব্যবসা করার জন্য কোন কোন বিষয়ের লক্ষ্য রাখতে হবে সে বিষয়গুলো আলোচনা করব।

যাতে করে আপনি কোনক্রমে-ই ঝামেলার সম্মুখীন না হন। অতএব আপনাকে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়তে হবে।

তাহলে আপনি পরিপূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন এবংসমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন । চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসা

Table of Contents

পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসা করার নিয়ম ২০২৩

পোল্ট্রি ফার্ম হলো লাভজনক একটি ব্যবসাটা। বর্তমান সময়ে এ ব্যবসার চাহিদা অনেক বেশি। কারণ, আমাদের দেশে উৎপাদিত পোল্ট্রি পর্যাপ্ত পরিমাণ না হওয়ায় সরকার এখন পোল্ট্রি বিদেশ থেকে আমদানি করে।

সুতরাং, এ উৎপাদনমুখী ব্যবসাটা আপনার সফলতার জন্য খুব উপকারী হবে। কারণ, বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় লাভ ও খুব বেশি সম্ভাবনা রয়েছে।

পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসার জন্য কি কি প্রয়োজন ?

আমরা এখন সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

  1. প্রথমত পোল্ট্রি ফার্ম করার জন্য আপনাকে একটা উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণ করতে হবে। জায়গাটা একটু বড় হলে বেশি ভালো হয়। তবে ছোট হলেও ভয়ের কিছু নাই।যেমন এক্ষেত্রে আপনি আপনার ঘরের পাশে পড়ে থাকা জমিটা ব্যবহার করতে পারেন।
  2. ফার্মের জন্য জায়গাটা কোলাহল মুক্ত নির্জন এলাকা হতে হবে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
  3. একটা বিষয় খুব বেশি খেয়াল রাখতে হবে যে , কোন ভাবেই যেন পানির সংকট দেখা না দেয়। এজন্য ফার্মের জায়গাটা আপনার ঘরের আশেপাশে করতে পারেন।

পোল্ট্রি ফার্ম কিভাবে তৈরি করবেন ?

ফার্মটি মাটি থেকে আনুমানিক চার ফুট উঁচু করে তৈরি করতে হবে। পোল্ট্রির থাকতে যাতে কোন অসুবিধা না হয় সেদিকে খুব বেশি খেয়াল রাখতে হবে।

ফার্মের মেঝেটা একটু আরামদায়ক রাখতে হবে। একটা বিষয় খুব বেশি খেয়াল রাখতে হবে যে, ঠান্ডার সময় মাঝে মাঝে একটু হিট দিতে হবে।

কারণ, পোল্ট্রি ঠান্ডা একদম সহ্য করতে পারে না।ফার্মটির চারপাশে খুব ভালোভাবে জাল বা নেট দিয়ে ঘিরে রাখতে হবে।যাতে করে কোন বিষাক্ত প্রাণী ঢুকে ক্ষতি করতে না পারে।

পোল্ট্রির জন্য উপযুক্ত কি কি খাদ্য নির্বাচন করতে হবে ?

পোল্ট্রি অল্প সময়ের মধ্যে বেড়ে উঠার পিছনে তার খাদ্যের সহায়তা খুব বেশি হয়ে থাকে। পোল্ট্রি সাধারণত গম, ভুট্টা , জব , এবং লতাপাতা খেয়ে থাকে।

কিন্তু তাদেরকে বেশি বেশি প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে।বাজারে এক ধরনের পোল্ট্রির জন্য বিশেষ খাবার পাওয়া যায়। সেটা সময়মতো নিয়মাপিক খাওয়ালে খুব বেশি উপকার হবে।

পোল্ট্রির রোগাক্রান্ত হওয়া থেকে সতর্ক কিভাবে থাকতে হবে ?

পোল্ট্রির সাধারণত কলেরা বসন্ত এই ধরনের রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। সুতরাং এই বিষয়ে খুব বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

এবং নিয়মাপিক টিকা দিতে হবে। কোন পোল্ট্রি রোগাক্রান্ত হলে সাথে সাথে রোগাক্রান্ত পোল্ট্রিটি অন্যান্য পোল্ট্রি থেকে আলাদা করে রাখতে হবে।

কারণ, পোল্ট্রির রোগ খুব সহজেই বিস্তার ঘটে যায়। সুতরাং সব সময় এই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

আরো পড়ুন : ১০০০ টাকায় ব্যবসা করার দারুণ ১০টি আইডিয়া

পোল্ট্রি বিক্রয়ের উপযুক্ত কিভাবে করতে হবে ?

লাভ বেশি পেতে হলে পোল্ট্রি উপযুক্ত করে তারপর বিক্রি করতে হবে। আপনাকে জেনে রাখতে হবে একটি উপযুক্ত পোল্ট্রির ওজন কত হতে পারে।

একটি উপযুক্ত পোল্ট্রির ওজন ২.৫০ থেকে ৩.০০ কেজির মধ্যে হতে পারে বা তার বেশিও হতে পারে।

উদাহরণ স্বরূপ ৪২দিনের মধ্যে একটি পোল্ট্রি বাজারি করন করতে হলে , সেই  উপযুক্ত পোল্ট্রির ওজন ৩০ দিনের মাথায় ২ কেজি ১০০গ্রাম দরকার, ৩৪ দিনের মাথায় ২ কেজি ৪০০ গ্রাম ।

এবং৩৬ দিনের মাথায় ২ কেজি ৬০০ গ্রাম এবং ৪২ দিনের মাথায় ২ কেজি ৮০০ গ্রাম হলে বুঝবেন পোল্ট্রিটি বাজীকরণ এর উপযুক্ত হয়ে গেছে।

পোল্ট্রি বাজারিকরণের প্রতি কিভাবে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে ?

আপনি যদি একটু বেশি লাভবান হতে চান, তাহলে আপনাকে এই ফার্মের পোল্ট্রিগুলো নিজ হাতে বিক্রয় করতে হবে।

সেক্ষেত্রে আপনি পোল্ট্রি গুলো বিভিন্ন রেষ্টরেন্ট, খাবার হোটেল, এবং বাজারে বিভিন্ন মাংসের দোকানগুলোতে ছাপ্লাই দিতে হবে।

তাছাড়া আপনি বাসায় থেকেও খুচরা পোল্ট্রি বিক্রি করতে পারেন ‌। তাতেও লাভের অংশটা বাড়তে পারে।

এভাবে আপনি প্রতিমাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা লাভবান হতে পারেন। যা আপনার সফলতার সিঁড়িতে দ্রুত আরোহণ করতে সাহায্য করবে‌।

আপনি ও হয়ে যাবেন সফল ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজন। আশাকরি আপনি পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে ভালোভাবে ধারনা পেয়েছেন ।

যারা পোল্ট্রি ব্যবসায় সফলতা লাভ করেছে তাদের অনুস্বরণ করা সফলতার চাবিকাঠি ।

সফল হতে হলে যেমন সফল মানুষদেরকে অনুসরণ করতে হয়। ঠিক তেমনিভাবে সফল ব্যবসায়ী হতে চাইলেও একজন সফল ব্যবসায়ীর অনুসরণ একান্ত কাম্য।

সফল ব্যবসায়ীর থেকে আপনার শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছুই আছে। কিভাবে কাজ করলে পোল্ট্রিগুলো সুস্থভাবে দ্রুত  বেড়ে উঠতে পারে ।

এবং কিভাবে তার বাজারিকরণ করতে হবে। সে সব অভিজ্ঞতা তার আছে। এজন্য তার থেকে ব্যবসায়ী টিপস্ নেওয়া সফল হওয়ার অন্যতম চাবিকাঠি ‌।

পোল্ট্রির ডিম নিয়ে কিভাবে ব্যবসা করব ?

পোল্ট্রি ফার্মের ব্যবসায়ীদের জন্য একটা প্ল্যাস পয়েন্ট হলো পোল্ট্রির ডিম। বর্তমান সময়ে ডিমের বাজার পুরাই তাক লাগানোর মতো।

একদিকে যেমনভবে পোল্ট্রির ব্যবসা করে আপনি লাভবান হবে পারবেন। সাথে সাথে আপনি পোল্ট্রির ডিম বিক্রি করে ও প্রচুর পরিমাণে লাভবান হতে পারেন।

বর্তমান বাজারে এক হালি ডিমূর মূল্য ৫৫ টাকা। তাহলে বুঝতেই পারছেন আপনি একটু যত্ন সহকারে এই ব্যবসাটা করতে পারলে আপনি রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যেতে পারবেন।

তবে আমি শুরুতেই বলেছিলাম,যে সব সফলতার পিছনে একটু হলেও কষ্ট লুকিয়ে থাকে। কারণ, কষ্ট ছাড়া কোন সফলতাই অর্জন করা সম্ভব নয়।

সুতরাং পোল্ট্রির ফার্ম করে যে আপনি একটা এক্সট্রা ব্যবসার সন্ধান অর্থাৎ ডিম পেয়ে গেলেন। যাকে বলা হয় মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি।

এজন্য আপনাকে উপরে উঠতে হলে একটু মাথা খাটিয়ে প্ল্যান প্রোগ্রাম করে ডিম বিক্রির কাজ সম্পাদন করতে হবে।

এখন আমি এমন কিছু নিয়ম-কানুন বা পদ্ধতি বলে দিবো , যার মাধ্যমে আপনি ডিম বিক্রি করে একটা বড় অংশের লাভবান হতে পারবেন। এজন্য লেখাটা শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

আরো পড়ুন : ৫ লাখ টাকার ব্যবসা হিসেবে ৭টি লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া

প্রথমে আপনি ডিমগুলো কোথায় এবং কিভাবে ছাপ্লাই করবেন ?

  • আপনি যেহেতু একসাথে অনেকগুলো ডিম পাচ্ছেন। সুতরাং আপনাকে সব ডিমগুলো একসাথে বিক্রি করতে হবে। এজন্য আপনি আপনার গ্রামের আশেপাশের বেকারীগুলোতে ছাপ্লাই দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনি একসাথে একটা বড় একাউন্ট পেয়ে যাবেন।
  • আপনি ডিমগুলো একসাথে বিক্রির জন্য বিভিন্ন হোটেল বা রেস্টুরেন্টে যোগাযোগ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনি ভাঙ্গা ডিমগুলো ও বিক্রি করতে পারবেন।
  • আপনি যদি একটু বেশি লাভবান হতে চান, তাহলে আপনি ঘরের সাথে একটা ছোট দোকান বানিয়ে ডিমগুলো খুচরা দরে বিক্রি করতে পারেন। সেক্ষেত্রে বাসার যেকেউ দোকানে প্রতিদিন একটু করে সময় দিলেই হয়ে যাবে।

সবমিলিয়ে উৎপাদনমুখী এই পোল্ট্রি ফার্মের ব্যবসা যদি আপনি একটু সতর্কতার সাথে যত্নসহকারে করতে পারেন ।

তাহলে দেখবেন চতুর্মুখী শুধু লাভ আর লাভ। এই একটা ব্যবসা করতে গিয়ে আপনি বোনাস হিসেবে পেয়ে যাচ্ছেন আরো একটি ব্যবসার উপাদান। সুতরাং এক কাজে আপনি পেয়ে যাচ্ছেন দুই সফলতা।

মানুষ পারে না এমন কোন কাজ পৃথিবীতে নেই। কোন কাজই আমাদের সাধ্যের বাইরে নয়। মানুষ চাইলে পুরো পৃথিবী জয় করতে পারে। সেখানে একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করা তো কোন ব্যাপারই না। 

আরেকটি বিষয় আপনাকে মনে রাখতে হবে।যে, পরিশ্রম ছাড়া কোন কিছুই উপার্জন করা সম্ভব নয়। তাই আপনাকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে । তাহলে সফলতা আপনার কাছে ধরা দিবে ।

পরিশেষে বলবো:

উপরে পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা  করলাম। অতএব আপনি যদি এই ব্যবসাগুলো করতে চান ।

তাহলে আপনি ব্যবসা শুরু করে দিবেন উপরের পদ্ধতি অনুযায়ী। লেখা ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই জানাবেন। ধন্যবাদ।

FAQ

ব্রয়লার মুরগির উৎপত্তি কোথায় ?

বয়লার মুরগির উৎপত্তির মূল রহস্য : ইউরোপীয় দেশগুলোর মুরগি ও কানাডার মুরগির জাত মিশ্রণ করে  ব্রয়লার তৈরি করা হয়েছে। এগুলো খামারে লালন-পালন করে বড় করা হয়। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন।

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment