কসমেটিক ব্যবসার আইডিয়া ২০২৪ : ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ।

আপনি কি কসমেটিক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চান ? তাহলে এ আর্টিকেলটা আপনার জন্য।

অনেকে লেখা-পড়া শিখার পরেও আপনি চাকরি খুঁজে পাচ্ছেন না, বারবার চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিয়ে আপনার চকারি মিলছে না।

মন খারাপও  কিছু নেই। আপনার মতো এমন সমস্যা বর্তমান সময়ে হাজারো যুবকের। সুতরাং, হীনমন্যতায় না ভুগে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন।

সমাজের চিত্র পরিলক্ষণ করে তার থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করুন। বর্তমান সময়ে আপনার মতো হাজারো যুবক মিথ্যা চাকরির আশা না করে বিভিন্ন ব্যবসার মাধ্যমে নিজের জীবন কে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

আর এজন্য আপনি কসমেটিকস ব্যবসা কে বেছে নিতে পারেন। কারণ, বর্তমান বাজারে কসমেটিকস ব্যবসার চাহিদা অনেক বেশি।

কসমেটিক ব্যবসার আইডিয়া

মানুষ সৌন্দর্যের পাগল। বর্তমান সময়ে মানুষের মাঝে সৌন্দর্যের প্রতিযোগিতা লিপ্ত হয়েছে।

নিজের সৌন্দর্য কিভাবে অন্যের থেকে বাড়ানো যায়, সব সময় মানুষ এই চিন্তা ভাবনা করে। বিশেষ করে আমাদের সমাজের মহিলারা এই বিষয়ে খুব বেশি সিরিয়াস।

তারা পরষ্পরে সৌন্দর্যের কারণে গর্ব ও করে থাকে। আর বর্তমান মানুষের সৌন্দর্যের পিছনে একটা বড় ভূমিকা রাখে কসমেটিকস সংযুক্ত জিনিসপত্র।

বর্তমান মেয়েরা প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন কসমেটিকস জিনিসপত্র ক্রয় করে থাকে। সুতরাং আপনি কসমেটিকস ব্যবসা শুরু করে আপনার জীবনের সফলতার সিঁড়িতে দ্রুত উঠতে পারেন। কারণ, কসমেটিকস ব্যবসার চাহিদা বাজারে খুব বেশি। 

তাই আজ আমি আপনাদের সুবিধার্থে কসমেটিক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

পাশাপাশি ব্যবসা করার জন্য কি কি সুক্ষ বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে সে বিষয়গুলো আলোচনা করব।

অতএব কসমেটিকস ব্যবসায় সফলতা অর্জনের জন্য এই আর্টিকেলে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে আপনাকে পড়তে হবে।

কসমেটিক ব্যবসার আইডিয়া ২০২৪

যেহেতু কসমেটিক পণ্যের বাজারে চাহিদা বেশি এজন্য কসমেটিক ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে। তবে, সব ব্যবসায় লাভবান হওয়ার জন্য কিছু মূলনীতি অনুসরণ করতে হয়।

আমি নিচে কসমেটিক ব্যবসায় দ্রুত লাভবান হওয়ার কিছু মূলনীতি উল্লেখ করছি।

  1. পূর্ব পরিকল্পনা
  2. মূলধন 
  3. কসমেটিকস ব্যবসার বিভিন্ন প্রকার
  4. কসমেটিকস মালামালের তালিকা
  5. জায়গা নির্ধারণ করা
  6. কাস্টমার নির্বাচন করা
  7. কাস্টমারদের সাথে সদাচরণ করা 

এতক্ষণ সংক্ষিপ্ত আলোচনা করলাম । এখন কসমেটিক ব্যবসার আইডিয়া বিস্তারিত আলোচনা করব ।

১, পূর্ব পরিকল্পনা

যে কোন ব্যবসা শুরু করতে হলে আপনাকে ঐ ব্যবসার পূর্ব পরিকল্পনা অরা জরুরি ‌। অনেকে দেখা যায় হঠাৎ করে কোন পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়াই ব্যবসা শুরু করেন।

কিছু দিন ভালো চললেও দেখা যায় পরবর্তীতে তারা ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়। কেননা, ব্যবসায় সফল হতে হলে পূর্ব পরিকল্পনা আবশ্যক।

যেমন ধরুন, আপনি কসমেটিকস ব্যবসা শুরু করবেন। তাহলে আপনাকে কসমেটিকস জিনিসপত্র সম্পর্কে পূর্ব ধারণা রাখতে হবে।

কোন সময়ে কোন কসমেটিকস জিনিসের চাহিদা বেশি হয়। অথবা কসমেটিকসটি কিভাবে ব্যবহার করলে বেশি উপকৃত হওয়া যায়।

এই সব ধারণা আপনার পূর্বে থাকলে তখন আপনি কাস্টমার কে কসমেটিকস পণ্য সম্পর্কে বুঝাতে পারবেন।

আর তখন আপনার কাস্টমার ও ক্রয় বেশি হবে। সুতরাং আপনাকে কসমেটিকস ব্যবসা শুরু করার আগে পূর্ব পরিকল্পনা করতে হবে।

২, মূলধন 

আপনার ব্যবসার লাভ নির্ভর করে আপনার ব্যবসার মুলধনের উপর। কারণ, বেশি বিক্রি হলে বেশি লাভ হবে।

আর বেশি বিক্রির জন্য দরকার বেশি পণ্য। আপনার দোকানে পণ্য বেশি থাকলে কাস্টমার বেশি হবে।

সুতরাং সব মিলিয়ে আপনার ব্যবসা লাভবান হতে হলে মুলধনের প্রতি একটু বেশি খেয়াল রাখতে হবে।

এক্ষেত্রে আপনার যদি নগদ টাকা বেশি না থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিজনেস লোন উঠাতে পারেন। 

৩, কসমেটিকস ব্যবসার বিভিন্ন প্রকার 

বর্তমান বাজারে কয়েক ধরনের কসমেটিকস ব্যবসা চলছে। আপনি কসমেটিকস ব্যবসার সেই ধরণগুলো নিচে তুলে সে সম্পর্কে আইডিয়া ও দিয়ে দিবো। সুতরাং আপনাকে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।

  1. ডিলারশিপ
  2. খুচরা মালামাল বিক্রি

(ক) ডিলারশিপ: ডিলারশিপের ব্যবসা করতে হলে আপনার একটু বেশি পরিমাণে মূলধনের প্রয়োজন।

তবে, এই ডিলারশিপের ব্যবসা করতে পারলে আপনি লাভটা ও পরিমাণে বেশিই পাবেন। ডিলারশিপ ব্যবসা করার নিয়ম হলো, আপনি বড়  কোন একটি কসমেটিকস উৎপাদন কারখানার সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে।

এবং তাদের থেকে মালামাল নিয়ে বিভিন্ন কসমেটিকস খুচরা ব্যবসায়ীদের দোকানে কসমেটিকস পণ্যগুলো পৌঁছাতে হবে। এই ব্যবসা করতে পারলে আপনি দ্রুত লাভবান হবেন।

(খ) খুচরা মালামাল বিক্রি: আপনার যদি মূলধন কম হয়, তাহলে আপনি কসমেটিকস মালামাল খুচরা বিক্রি করতে পারেন।

বর্তমান বাজারে কসমেটিকস খুচরা মালামালের চাহিদা অনেক বেশি। আপনি এই কসমেটিকস খুচরা মালামাল বিক্রি করার একটা দোকান ভাড়া নিয়ে শুরু করতে পারেন।

আবার যদি আপনি দোকান ভাড়া না নিয়ে কসমেটিকস ব্যবসার পাশাপাশি অন্যান্য কাজ ও করতে চান, তাহলে আপনি তাও করতে পারবেন।

যেমন আপনি স্বাভাবিক ভাবে অন্য কাজ করেন, তখন আপনি পার্ট টাইম হিসেবে কসমেটিকস ব্যবসা করতে পারবেন।

সেক্ষেত্রে আপনি প্রতি শুক্রবার মসজিদের সামনে কসমেটিকস মালামাল নিয়ে বসতে পারেন।

অথবা বিভিন্ন ধর্মীয় অথবা বিধর্মীয় অনুষ্ঠানে যেমন – মাহফিল বা সভা অথবা বিভিন্ন পূজার অনুষ্ঠানে,ইত্যাদি অনুষ্ঠানে আপনি কসমেটিকস মালামাল নিয়ে বসতে পারেন।

উপরোক্ত দুইভাবে আপনি কসমেটিকস খুচরা ব্যবসা করতে পারেন। আর এই সব ক্ষেত্রে চাহিদা অনেক বেশি।

৪, জায়গা নির্ধারণ করা 

আপনার ব্যবসা সফলতা অর্জন করতে সবচেয়ে বেশি উপকারী হবে আপনার ব্যবসার জায়গা নির্ধারণ করা।

কারণ, ব্যবসার উন্নতির জন্য কাস্টমার বেশি দরকার। আর কাস্টমার বেশি পেতে হলে আপনাকে জায়গাটা ভালোভাবে দেখেশুনে নির্বাচন করতে হবে।

অর্থাৎ, যেখানে মানুষের আনাগোনা বেশি হয়, মানুষ যেখানে প্রায় সময় ঘুরতে যায়। এই বিষয়টি মাথায় রূখে আপনাকে ব্যবসার জন্য জায়গা নির্ধারণ করতে হবে।

সেক্ষেত্রে আপনি মসজিদ, বাজার, স্কুল, কলেজের সামনে অথবা বিভিন্ন পার্কের সামনে কসমেটিকস খুচরা মালামালের ব্যবসা করতে পারেন।

সুতরাং ব্যবসায় লাভবান হতে চাইলে জায়গা নির্ধারণের ব্যপারে খুব সচেতন হওয়া । প্রয়োজনে অভিজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।

৫, কসমেটিকস পণ্য তালিকা

আমি এখানে মেয়েদের কসমেটিক লিস্ট বলছি ।

  •  স্কিন কেয়ার প্যাক 
  • হেয়ার কেয়ারিং প্রোডাক্ট
  • মেকআপ সরঞ্জাম
  • মাউথ ক্লিনিং প্রোডাক্ট
  • ফেস প্রাইমার 
  • কনসিলার 
  • কমপ্যাক্ট প্রোডাক্ট
  • কনট্যুর প্রোডাক্ট
  • ব্রোঞ্জার প্রোডাক্ট
  • হাইলাইটার প্রোডাক্ট
  • সেটিং স্প্রে প্রোডাক্ট
  • মেকাপ উঠানোর সামগ্রি বিশেষ প্রোডাক্ট
  • ময়েশ্চারাইজার প্রোডাক্ট
  • কাজল প্রোডাক্ট
  • আইলাইনার প্রোডাক্ট
  • মাসকারা প্রোডাক্ট
  • চোখের ভ্রু বৃদ্ধিকারী প্রোডাক্ট
  • লিপস্টিক প্রোডাক্ট
  • লিকুইড লিপস্টিক প্রোডাক্ট
  • লিপ ক্রেয়ন প্রোডাক্ট
  • নখ পালিশ প্রোডাক্ট
  • নেইল আর্ট কিটস প্রোডাক্ট
  • নেইল পলিশ সেট প্রোডাক্ট
  • নখের যত্ন প্রোডাক্ট
  • মুখমন্ডল পরিষ্কারক প্রোডাক্ট

৬, কাস্টমার নির্বাচন করা 

কাস্টমার নির্বাচন করা ব্যবসায় লাভবান হওয়ার একটি বড় ধরনের টেকনিক। আপনার দোকানে কোন ধরনের কাস্টমারদের বেশি আনাগোনা সেটা আপনাকে খেয়াল করতে হবে। সেই অনুযায়ী আপনাকে দোকানে কসমেটিকস মালামাল উঠাতে হবে।

৭, কাস্টমারদের সাথে সদাচরণ করা

কথায় বলে , কাস্টমার হলো ব্যবসার লক্ষী। সুতরাং, তাদের সাথে সব সময় ভালোবাসা সুলভ আচরণ করা।

কেনাকাটার সময় দরদাম নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হতেই পারে। তবে, সেক্ষেত্রে আপনাকে নমনীয়তা অবলম্বন করতে হবে।

এবং কাস্টমার কে বারবার জিনিস সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে। কেননা, ব্যবহারে বংশের পরিচয়।

সুতরাং, আপনার আচরণই আপনার কাস্টমার বাড়াবে। আর যদি আপনি কাস্টমারদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। তাহলে আপনার কাস্টমার দিন দিন কমে যাবে।

আর কাস্টমার বেশি হলে আপনার ব্যবসা দ্রুত সফলতার দিকে এগিয়ে যাবে। সুতরাং, সব সময় কাস্টমারদের সাথে হাঁসি মুখে কথা বলবেন।

আরো পড়ুন : কসমেটিকস পাইকারি বাজার কোথায় কোথায় আছে ?

উপসংহার

উপরে কসমেটিক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করলাম । কসমেটিক ব্যবসা খুব লাভজনক একটা ব্যবসা।

ব্যবসা করতে হলে ব্যবসায়ী মন লাগে। সুতরাং যে কোন ব্যবসার জন্য হুটহাট করে শুরু না করে আপনাকে ঐ ব্যবসা সম্পর্কে ভালোভাবে আইডিয়া নিতে হবে।

এজন্য উপরোক্ত আর্টিকেল অনুযায়ী আপনি ব্যবসা শুরু করলে দ্রুত লাভবান হতে পারবেন।

FAQ

অনলাইনে কসমেটিকস ব্যবসা করা যাবে কিনা?

হ্যাঁ অনলাইনে খুব সহজেই কসমেটিকস ব্যবসা করতে পারবেন । বর্তমান সময়ে অনলাইনে এই ব্যবসার অনেক চহিদা রয়েছে ।

প্রচুর মানুষ ফেসবুকের মাধ্যমে কসমেটিকস ব্যবসা করতেছে । এই ব্যবসায় অনেক লাভ । সুতরাং আপনিও শুরু করতে পারেন এই চমৎকার ব্যবসাটি ।

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment