ইলেকট্রিক ব্যবসার আইডিয়া ২০২৩ : ব্যবসা করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন ।

আপনি কি ইলেকট্রিক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চান ? তাহলে এ আর্টিকেলটা আপনার জন্য।

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে চলমান ব্যবসা হলো ইলেকট্রনিক ব্যবসা। ইলেকট্রনিক ব্যবসায় সিজনাল বা আনসিজনাল কোন মেটার না।

ইলেকট্রনিক ব্যবসা হলো এমন একটি ব্যবসা যা ১২ মাস চলে। কারণ, বর্তমান সময়ে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মধ্যে ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের সংখ্যা খুব বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মানুষের বাসা – বাড়ি, অফিস- আদালত, স্কুল, কলেজ, দোকান, এমনকি মসজিদ, মাদ্রাসা ,ও মন্দির সব জায়গাতেই ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের ছড়াছড়ি।

বর্তমান বাজারে ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের চাহিদা বেড়েই চলেছে। এবং সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সব ধরনের মানুষ ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

তাই আজ আমি আপনাদের সুবিধার্থে ইলেকট্রিক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

পাশাপাশি ব্যবসা করার জন্য কি কি সুক্ষ বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে সে বিষয়গুলো আলোচনা করব।

যাতে করে আপনি খুব সহজেই ব্যবসা করতে পারেন। অতএব আপনাকে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়তে হবে।

তাহলে আপনি পরিপূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন এবংসমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন । চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

ইলেকট্রিক ব্যবসার আইডিয়া

ইলেকট্রিক ব্যবসার আইডিয়া ২০২৩

যেহেতু ইলেকট্রিক পণ্যের বাজারে চাহিদা বেশি এজন্য ইলেকট্রনিক ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে। তবে, সব ব্যবসায় লাভবান হওয়ার জন্য কিছু মূলনীতি অনুসরণ করতে হয়।

আমি নিচে ইলেকট্রনিক ব্যবসায় দ্রুত লাভবান হওয়ার কিছু মূলনীতি উল্লেখ করছি।

  1. পূর্ব পরিকল্পনা
  2. ইলেকট্রনিক ব্যবসা করার পদ্ধতি 
  3. ইলেকট্রনিক ব্যবসার প্রকারভেদ
  4. মূলধন
  5. অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা
  6. লাইসেন্স করা
  7. জায়গা নির্বাচন করা
  8. কাস্টমার নির্বাচন করা
  9. প্রচার প্রসার করা

এতক্ষণ সংক্ষিপ্ত আলোচনা করলাম । এখন ইলেকট্রিক ব্যবসার আইডিয়া বিস্তারিত আলোচনা করব ।

১. পূর্ব পরিকল্পনা

প্রতিটি ব্যবসার ক্ষেত্রে পূর্ব পরিকল্পনা জরুরী। আপনি যে ব্যবসা করবেন, সেই ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে ঐ ব্যবসার সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে আইডিয়া রাখতে হবে।

এবং লাভ ক্ষতির বিষয়টিও আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। এভাবে সতর্কতার সাথে আপনি ইলেকট্রনিক ব্যবসা শুরু করলে দ্রুত লাভবান হতে পারবেন।

সুতরাং প্রথমে ইলেকট্রনিক ব্যবসা নিয়ে পরিকল্পনা করবেন। তারপর পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবসা চালিয়ে যাবেন। তাহলে আপনি ব্যবসায় সফলতা অর্জন করবেন। ইনশাআল্লাহ !

২. ইলেকট্রনিক ব্যবসা করার পদ্ধতি

আমাদের দেশে ইলেকট্রনিক ব্যবসা করার দুটি পদ্ধতি রয়েছে।

  • (ক) ইলেকট্রিক ডিলার ব্যবসা
  • (খ) খুচরা মালামাল বিক্রি করা

(ক) ডিলারশিপ ব্যবসা হলো– কোন কম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়া। তাদের পণ্যগুলো নিয়ে সাধারণ খুচরা ব্যবসায়ীদের দোকানে দোকানে পৌঁছিয়ে দেওয়া। 

(খ) খুচরা মালামাল বিক্রি করার অর্থ হলো সাধারণ ইলেকট্রনিক দোকান দেওয়া। যদি আপনি ইলেকট্রনিক ব্যবসা নতুন শুরু করেন, তাহলে আপনার জন্য ইলেকট্রনিক খুচরা মালামাল বিক্রি করা লাভজনক ব্যবসা হবে।

৩. ইলেকট্রনিক ব্যবসার প্রকারভেদ

বর্তমান আমাদের বাজারে বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক ব্যবসা দেখা যায়। এবং ইলেকট্রনিক সব ধরনের ব্যবসার বেশ চাহিদা ও রয়েছে বাজারে।

আপনাদের সুবিধার্থে বুঝার জন্য নিচে কিছু ইলেকট্রনিক ব্যবসার প্রকার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

  1. ইলেকট্রিক্স  দোকান
  2. ইলেকট্রনিক মেরামতের দোকান
  3. ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের দোকান
  4. ইলেকট্রনিক অনলাইন ব্যবসা 

(ক) ইলেকট্রনিক্স  দোকান

বর্তমান বাজারে ইলেকট্রনিক পণ্য কেনাকাটার ধুম পড়েছে। সব মানুষ আপন আপন বাসা-বাড়ি সাজাতে ব্যস্ত।

আর বাসা-বাড়ি  সাজানোর ক্ষেত্রে ৯০% থাকে ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র। এ ধরনের ব্যবসায় আপনি যে ইলেকট্রনিক পণ্যগুলো খুব বেশি বিক্রি করতে পারবেন,

তা হলো- টিভি, ফ্রিজ, অ্যান্ড্রয়েড ফোন বা  অ্যান্ড্রয়েড ছাড়া সাধারণ মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপট্যাপ, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ইত্যাদি ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র।

(খ) ইলেকট্রনিক মেরামতের দোকান

যে জিনিসের ব্যবহার যত বেশি হয়। সে জিনিস তত বেশি নষ্ট বা খারাপ হয়।

আর ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের গুলো ক্ষেত্রে এই বিষয়টি একটু বেশি হয়ে থাকে। কারণ, তারের জিনিসের কোন গ্যারান্টি নেই।

যখন তখন ছুটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর কারেন্টের খেলা তো এই হঠাৎ কোন সুইচ কেটে যায় ।

আবার কখনো কারেন্টের বোর্ড বাষ্ট হয়ে যায়। আবার কখনো ফ্যান, টিভি, রিমোটের সমস্যা হয়।

আবার কখনো মোবাইল ফোন বা চার্জার বা হেডফোনের সমস্যা হয়। এমন সব ধরনের সমস্যায় মানুষ নিত্য দিনে ভুগে থাকে।

এজন্য তারা এই সব ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র মেরামত করতে আগ্রহী হয়ে থাকে। সুতরাং তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য আপনি ইলেকট্রনিক মেরামতের ব্যবসা করলে দ্রুত লাভবান হতে পারবেন।

তবে এক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় হলো আপনাকে ভালো সার্ভিস দিতে হবে। মানুষ যেন আপনার দোকান থেকে একবার সার্ভিস এর কাজ করলে অন্য ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের সমস্যা হলে আপনার কাছে আবার আসতে চায়।

এজন্য সার্ভিস ভালো দিয়ে কাস্টমার হাত করে নিতে হবে। এভাবে আপনি ইলেকট্রনিক মেরামতের ব্যবসা করতে পারলে অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।

( গ) ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের দোকান

ইলেকট্রিক ব্যবসার আইডিয়া

ইলেকট্রনিক ব্যবসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম পুঁজির ব্যবসা হলো ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের ব্যবসা করা।

এই ব্যবসায় আপনি ইলেকট্রনিক বিভিন্ন জিনিসপত্র যেমন- সুইচ, বোর্ড, বাল্ব বা ইলেকট্রনিক লাইট, হোল্ডার , ক্যাবল,তার, চার্জার, মোবাইলের ব্যাটারি, হেডফোন ইত্যাদি। 

কম পুঁজির মাধ্যমে এই খুচরা ব্যবসা করে আপনি তাড়াতাড়ি লাভবান হতে পারেন। আর এসব ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের চাহিদা ও বর্তমান অনেক বেশি। 

(ঘ) ইলেকট্রনিক অনলাইন ব্যবসা

বর্তমান সময়ে সব কিছুই অনলাইন ভিত্তিক। তাই এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই ব্যবসা ও।

এখন অনলাইন জুড়ে রয়েছে ব্যবসার ছড়াছড়ি। আর বিশিরভাগ মানুষ এখন অনলাইনে কেনাকাটা করতে পছন্দ করে।

সুতরাং আপনি বাসায় বসেও অনলাইনে ইলেকট্রনিক ব্যবসা করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে একটা পেইজ খুলতে হবে।

এবং ইলেকট্রনিক জিনিসপত্রের সুন্দর সুন্দর পিকচার উঠিয়ে পেইজে আপলোড করতে হবে ঐ জিনিসের ডিটেলস সহ। এবং সব সময় আপনাকে অনলাইনে এক্টিড থাকতে হবে। 

৪, মূলধন

যে কোন ব্যবসার লাভ নির্ভর করে তার মুলধনের উপর। অর্থাৎ, আপনার ব্যবসার পুঁজি যত বেশি হবে।

আপনার লাভ ও তত বেশি আসবে। এক্ষেত্রে যদি আপনার কাছে নগদ লোন না থাকে। তাহলে আপনি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিজনেস লোন নিতে পারবেন।

আনুমানিক ৫-১০ লক্ষ টাকা হলে আপনি ভালোভাবে ইলেকট্রনিক ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।

আর তখন আপনার এই ইলেকট্রিক ব্যবসা হতে তখন মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা অনাহাসে পেয়ে যাবেন। 

৫, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা 

যে কোন ব্যবসার জন্য অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। আবার কিছু ব্যবসা এর ব্যতিক্রম ও আছে। কিন্তু ইলেকট্রনিক ব্যবসার সফলতা পুরোটাই নির্ভর করে ব্যবসায়ীর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার উপর।

কারণ, ইলেকট্রনিক ব্যবসায় আপনি যত বেশি দক্ষতা সম্পন্ন হবেন , আপনি তত বেশি কাজ পাবেন এবং তা করতেও পারবেন। আর মানুষ সব কাজের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ও দক্ষ লোকদের খোঁজ করে।

৬, লাইসেন্স করা

বর্তমান বাংলাদেশের আইন অনেক ধাপ এগিয়ে গেছে। এজন্য সব ব্যবসার জন্য মানুষ লাইসেন্স করে থাকে।

তাই আপনাকে ও ইলেকট্রনিক ব্যবসার জন্য লাইসেন্স করা জরুরি। আর লাইসেন্স করা থাকলে আপনি সব দিক দিয়ে সুরক্ষিত থাকবেন। বর্তমানে বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী ১৮ বছর বয়সী সবাই লাইসেন্স করতে পারবে। 

সেক্ষেত্রে আপনি যদি শহরে থাকেন তাহলে লাইসেন্সের জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

আর যদি আপনি গ্রামে থাকেন, তাহলে আপনি লাইসেন্সের জন্য জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

৭, জায়গা নির্বাচন করা

যে কোন ব্যবসার জন্য তার উপযোগী জায়গা নির্বাচন করা ব্যবসায় লাভবান হওয়ার জন্য খুব কার্যকরী।

ইলেকট্রনিক ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনি যে জায়গায় মানুষের আনাগোনা বেশি হয়। এবং প্রায় সময় মানুষের চালাচল থাকে সেই জায়গাটি নির্বাচন করতে পারেন।

কারণ, মানুষের আনাগোনা বেশি হলে আপনার পণ্য ও বেশি বিক্রি হবে। 

৮, কাস্টমারদের চাহিদা বুঝা

আপনাকে কাস্টমারদের চাহিদা বুঝতে হবে। আপনার দোকানে কোন ধরনের কাস্টমারদের আনাগোনা বেশি হয়।

সেই অনুযায়ী আপনাকে দোকানে মালামাল আনতে হবে। তাহলে আপনার বেচাকেনা খুব বেশি হবে। 

৯, প্রচার প্রসার করা

ব্যবসা উপরে উঠাতে হলে  এবং ব্যবসায় লাভবান হতে হলে , আপনাকে আপনার দোকানের প্রচার প্রসার খুব বেশি করতে হবে।

আপনার দোকানের যত বেশি পরিমাণ প্রচার হবে। আপনার কাস্টমার তত বেশি পাবেন। আর যত বেশি কাস্টমার হবে,তত বেশি বেচাকেনা যে হবে এটা বলার অবকাশ রাখে না। আশাকরি আপনি ইলেকট্রিক ব্যবসার আইডিয়া ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন ।

আরো পড়ুন : এনার্জি অডিট কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং কিভাবে বিদ্যুৎ খরচ কমায় ?

ইলেকট্রিক সামগ্রী তালিকা

আপনাদের সুবিধার্থে ইলেকট্রিক পণ্যের তালিকা বলছি ।

  • এনার্জি লাইট
  • চার্জার লাইট
  • সিলিং ফ্যান
  • টেবিল ফ্যান
  • তার
  • টেস্টার
  • টেলিভিশন
  • রিমোট
  • ফ্রিজ
  • স্ট্যাবিলাইজার
  • ব্লেন্ডার মেশিন
  • স্পিকার
  • আয়রন
  • পানির ফিল্টার
  • সিডি/ডিভিডি প্লেয়ার
  • মাল্টিপ্লাগ
  • আইপিএস
  • ইউপিএস
  • মাইক্রোওয়েভ
  • ওয়াশিং মেশিন
  • ক্যামেরা
  • রুম হিটার বা গিজার
  • এয়ার কন্ডিশন
  • এয়ার কুলার
  • ব্যটারি

এরকম অনেক ইলেকট্রনিক পণ্য রয়েছে । আশাকরি আপনি বুঝতে পেরেছেন ।

উপসংহার

উপরে ইলেকট্রিক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করলাম । ইলেকট্রনিক ব্যবসা খুব লাভজনক একটা ব্যবসা।

সুতরাং আপনি যদি উপরোক্ত কথাগুলো মাথায় রেখে ইলেকট্রনিক ব্যবসা শুরু করেন। তাহলে আপনি লাভবান হতে পারবেন।

আশাকরি আপনি অনেক উপকার পেয়েছেন । লেখা ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।

FAQ

ইলেকট্রনিক্স জিনিসের দোকান দিলে কেমন লাভ হতে পারে?

ইলেকট্রনিক্স জিনিসের দোকান দিলে অনেক লাভ হবে । আনুমানিক ৫-১০ লক্ষ টাকা দিয়ে আপনি ভালোভাবে ইলেকট্রনিক ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। তখন মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা অনাহাসে লাভ করতে পারবেন। 

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment