সঠিক উপায়ে ধানের ব্যবসা করার নিয়ম – ২০২৪

ধানের ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে আপনি কি জানতে চান ? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

আমাদের দেশ হলো কৃষি প্রধান দেশ। আর কৃষি প্রধান খাদ্য হিসেবে ধান হল জনপ্রিয় খাদ্য। এ দেশে ধানের পর্যাপ্ত পরিমাণ চাহিদা রয়েছে।

কেননা এই ধান থেকে চাউল তৈরি হয় । এরপর চাউল থেকে ভাত তৈরি হয়। আর আমরা সকলেই ভাতের উপর নির্ভরশীল।

ধানের ব্যবসায় প্রচুর পরিমাণ লাভ রয়েছে। যদি আপনি নিয়ম তান্ত্রিক এই ব্যবসা করতে পারেন তাহলে কখনো লস এর শিকার হবেন না।

তাই আজ আমি ধানের ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। পাশাপাশি নানান খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব । যাতে করে খুব সহজে আপনি ধানের ব্যবসায় লাভবান হতে পারেন। চলুন আলোচনা শুরু করা যায়।

ধানের ব্যবসা করার নিয়ম

ধানের ব্যবসা করার নিয়ম ২০২৪

আমি এখানে ব্যবসা করার বিস্তারিত নিয়ম নিয়ে আলোচনা করব। অর্থাৎ :

  • কিভাবে আপনি ধান ক্রয় করবেন ।
  • কিভাবে আপনি ধান স্টক করবেন
  • কিভাবে আপনি আবার ওই ধান বিক্রি করবেন।

ইত্যাদি এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ধানের ব্যবসা করার জন্য অভিজ্ঞ সম্পন্ন হতে হবে ।

অর্থাৎ ধান ক্রয় করার ক্ষেত্রে অবশ্যই নিজে অভিজ্ঞ সম্পন্ন হতে হবে। কেননা ধানের মধ্যে নানান ভেজাল থাকে এবং ধান বিভিন্ন রকম রয়েছে।

এ কারণে অবশ্যই অভিজ্ঞ সম্পন্ন হতে হবে। অন্যথায় এ ব্যবসায় লস খাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

যদি আপনি অভিজ্ঞ সম্পন্ন না হন তাহলে যারা অভিজ্ঞ তাদের কাছ থেকে শিখে নেবেন অথবা যারা অভিজ্ঞ তাদেরকে দিয়ে ধান ক্রয় করাবেন। আশা করি সফলতা লাভ করতে পারবেন।

ধান ক্রয় করার সঠিক সময় কখন ?

আমাদের দেশে সব সময় ধান বিক্রি করা হয় । তাই আপনি যেকোনো সময় হোক না কেন ধান ক্রয় করতে পারবেন।

তবে যখন ইরি ধান এর মৌসুম আসবে তখন সবচেয়ে বেশি ধান পাওয়া যায়। এই সময় আপনি প্রচুর পরিমাণ ধান ক্রয় করতে পারবেন। পাশাপাশি খুব কম দামে পাবেন।

ধান কোথায় থেকে ক্রয় করব ?

ধান ক্রয় করার দুটি জায়গা রয়েছে।

১. সরাসরি বাজার থেকে। অর্থাৎ বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলের বাজারে ধান বিক্রি করা হয়। সেখান থেকে আপনি অভিজ্ঞ লোকের মাধ্যমে দেখেশুনে ভালো ধান ক্রয় করবেন।

কখনোই ভিজা ধান ক্রয় করবেন না। এতে করে পরবর্তীতে ওজন কমে যাবে এবং নষ্ট হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকবে।

২. সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে। অর্থাৎ আপনি ইচ্ছা করলে বাজার থেকে ক্রয় না করে সরাসরি কৃষকের বাড়ি থেকে ধান ক্রয় করতে পারেন। অতঃপর বাজার মূল্য অনুযায়ী কৃষককে টাকা পরিশোধ করবেন।

ধান বিক্রি

আপনি যে সমস্ত ধান ক্রয় করলেন তা সরাসরি বিক্রি করে দিতে পারেন কোন ধরনের স্টক না করে। এক্ষেত্রে লাভ একটু কম হবে।

বর্তমানে এভাবেই প্রচুর মানুষ বিজনেস করছে। কেননা স্টকে ধান রাখলে অনেক ঝামেলা হয়। যেমন :

  1. বৃষ্টির পানি বা বন্যার পানির কারণে ধান নষ্ট হয়ে যায়।
  2. ধানে নানান ধরনের পোকা ধরে।
  3. স্টকে রাখার কারণে নানান ধরনের খরচ বেড়ে যায়।

ইত্যাদি আরো নানা ধরনের সমস্যা হয়। তাই অনেকে-ই স্টকে না রেখে সরাসরি বিক্রি করে ফেলে। আপনি এই পদ্ধতিটি গ্রহণ করতে পারেন।

আশা করি আপনি খুব সহজে বুঝতে পেরেছেন ধানের ব্যবসা করার নিয়ম।

ধানের স্টক ব্যবসা

অর্থাৎ ধান ক্রয় করার পর সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি না করে ধান স্টকে করতে পারেন। এরপর সুযোগ বুঝে যখন দাম বাড়বে তখন বিক্রি করে ফেলবেন। এভাবে স্টকে রেখে ধান বিক্রি করলে প্রচুর লাভবান হতে পারবেন।

ধান স্টকে রাখার ক্ষেত্রে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে ? 

বর্তমানে স্টকে রাখা ধানগুলো প্রচুর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সাবধানতা অবলম্বন না করার কারণে। তাই অবশ্যই স্টকে রাখার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে কয়েকটি বিষয়ে।

  • শুকনা ধান ক্রয় করবেন। যদি সম্ভব হয় ধান ক্রয় করার পর রোদে শুকিয়ে নিবেন।
  • ধান রাখার জন্য এমন একটি গুদাম বা গোডাউনের ব্যবস্থা করবেন যেখানে বন্যার পানি বা বৃষ্টির পানি স্পর্শ করে না।
  • গুদাম যেন পরিষ্কার এবং শুষ্ক হয়।
  • বিশেষ করে খেয়াল রাখতে হবে ইঁদুর যেন ধান কোন ভাবে না কাটে।

অবশ্যই এই সমস্ত বিষয়গুলো ফলো করবেন। আশা করি আপনার স্টকে রাখা ধানগুলো নষ্ট হবে না।

স্টক রাখা ধান কখন বিক্রি করব ?

ধান বিক্রি করার নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। যখন দেখবেন ধানের দাম বেড়ে গেছে তখনই স্টকে রাখা ধানগুলো বিক্রি করে দিবেন।

এজন্য সব সময় আপনাকে ধানের মার্কেটপ্লেসে খেয়াল রাখতে হবে। যখনই সুযোগ পাবেন তখনই বিক্রি করে ফেলবেন। এক্ষেত্রে বিলম্ব করবেন না। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন।

যেমন : ধান ক্রয় করা থেকে স্টকে রাখা পর্যন্ত যত টাকা খরচ হয়েছে তা বাদ দিয়ে যদি প্রতি মনে ১০০ থেকে ২০০ টাকা লাভ হয় তাহলে আপনি বিক্রি করে ফেলবেন। 

ধান থেকে চাউল তৈরি করে বিক্রি করা

অর্থাৎ ধান থেকে চাউল তৈরি করে অনেক লাভে বিক্রি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে পরিশ্রম একটু বেশি হবে তবে মুনাফা অনেক বেশি হবে। ধান থেকে চাউল তৈরি করলে দুইটি লাভ।

  1. চাউল পাচ্ছেন।
  2. কুড়া পাচ্ছেন।

চাউলের সাথে সাথে কুড়াও বিক্রি করতে পারবেন।

ধান থেকে চাল তৈরি করার প্রক্রিয়া

সর্বপ্রথম আপনাকে ধান সিদ্ধ করতে হবে। তারপর শুকাতে হবে। তারপর ধান ভাঙ্গাতে হবে। ভাঙ্গানোর পরেই চাউল তৈরি হয়ে যাবে।

এভাবে খুব সহজেই চাউল তৈরি হয়ে যাবে। চাউলের চাহিদা অনেক বেশি। তাই এ ব্যবসা করে সফলতা লাভ করতে পারবেন খুব সহজেই।

ধানের বিজনেস করতে গেলে কত টাকা ইনভেস্ট করতে হবে ?

ধানের ব্যবসা আপনি অল্প পুঁজি দিয়ে শুরু করতে পারবেন। তাই হিসেবে এই ব্যবসা মাত্র এক লক্ষ টাকা দিয়ে শুরু করতে পারবেন। এর উপরে যত টাকা ইনভেস্ট করতে পারেন এটা আপনার ইচ্ছা। তাই দেরি না করে আজই এই ব্যবসা শুরু করে দিন।

আরো পড়ুন :-

  1. অনলাইনে পণ্য বিক্রয় করে আয় করুন
  2. উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় | সফল উদ্যোক্তা হওয়ার মূলমন্ত্র
  3. ফ্লেক্সিলোড ব্যবসা করার নিয়ম

ধানের ব্যবসা কেন করবেন ?

ধান হলো জনপ্রিয় একটি খাদ্য শস্য । এই ধান থেকে তৈরি করা হয় চাউল। আর চাউল থেকে তৈরি করা হয় ভাত। আর আমরা বাঙালিরা ভাত খেতে পছন্দ করি। তাহলে বুঝতেই পারছেন ধনের চাহিদা অনেক বেশি। এর চাহিদা কখনো কমবে না বরং দিনে দিনে আরো বাড়তে থাকবে। তাই আপনি এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ধানের ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন ।

পরিশেষে বলবো : উপরে ধানের ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। আশা করি আপনি খুব সহজে বুঝতে পেরেছেন।

যদি লেখাটি ভালো লাগে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। পাশাপাশি আপনার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ ।

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

1 thought on “সঠিক উপায়ে ধানের ব্যবসা করার নিয়ম – ২০২৪”

Leave a Comment