১৪টি উপায়ে ইসলামে ব্যবসা করার নিয়ম

আপনি কি জানতে চান ইসলামে ব্যবসা করার নিয়ম কি ? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

মুসলমান হিসেবে ব্যবসার ক্ষেত্রে অবশ্যই হারামকে পরিত্যাগ করতে হবে আর হালালকে গ্রহণ করতে হবে।

অর্থাৎ হালাল ব্যবসা করতে হবে এবং হারাম ব্যবসা পরিত্যাগ করতে হবে। কেননা এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন : আল্লাহ তায়ালা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। ( সূরা বাকারা : ২৭৫ নাম্বার আয়াত)।

অর্থাৎ এ আয়াত দ্বারা আমরা বুঝতে পারি ব্যবসা হলো হালাল। পাশাপাশি অবৈধভাবে ব্যবসা করতে নিষেধ করেছেন। আজ আমি ইসলামে ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে বলব। যাতে করে আপনি হালালভাবে বৈধ পন্থায় ব্যবসা করতে পারেন।

ইসলামে ব্যবসা করার নিয়ম
ইসলামে ব্যবসা করার নিয়ম

Table of Contents

ইসলামে ব্যবসা করার নিয়ম

এখানে আমি প্রায় ১৪টি মূলনীতি নিয়ে আলোচনা করব। যেগুলো ফলো করলে অবশ্যই আপনি হারাম থেকে বেঁচে থাকতে পারেন।

১. কারো সাথে প্রতারণা , ধোঁকাবাজি , ফাঁকিবাজি করা যাবে না।

অর্থাৎ ব্যবসা করার সময় মন্দ জিনিসকে ভালো চালিয়ে দেওয়া এক ধরনের ধোকা। অতএব আপনাকে এই সমস্ত অন্ধকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সালাম হাদিসের মধ্যে বলেছেন যে ধোকা দেয় সে আমার উম্মতের মধ্যে গণ্য নয়। মুসলিম শরীফে এই হাদিসটি রয়েছে। হাদিস নাম্বার ১০২ ।

২. ব্যবসা করার সময় কারো ক্ষতি করা যাবে না

ব্যবসা করার সময় অবশ্যই এই বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে যে আমার দ্বারা যেন অন্য কারো ক্ষতি না হয় বরং আমার দ্বারা যেন অন্য কারো উপকার হয়।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেছেন নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং অন্যের ক্ষতি করা কোনটি করা উচিত নয়। এই হাদিসটি রয়েছে ইবনে মাজাহ শরীফ এ ২৩৪১ নাম্বার হাদিসে।

৩. ইসলামে ব্যবসা করার নিয়ম হলো ব্যবসা করার সময় মিথ্যার আশ্রয় নেয়া যাবে না।

মিথ্যা বড় ধরনের অপরাধ এবং নিন্দনীয় বিষয়। তাই ব্যবসা করার সময় অবশ্যই আপনাকে মিথ্যা কথা বলা থেকে বেঁচে থাকতে হবে। এ ব্যাপারে কোরআনের মধ্যে রয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন : তোমরা সত্যের সাথে অসত্যের মিশ্রণ ঘটাবে না। এবং তোমরা জেনেশুনে সত্যকে গোপন করবে না। অর্থাৎ আমরা এই আয়াতের বুঝতে পারি ব্যবসার সময় অবশ্যই মিথ্যার আশ্রয় নেয়া যাবে না।

৪. ব্যবসা সময় গীবত করা যাবে না।

গীবত এটা অনেক বড় ও মারাত্মক গুনাহ । হাদিসে এই ব্যাপারে অনেক সতর্কতা এসেছে। পাশাপাশি এই ব্যক্তি সম্পর্কে অনেক কঠিন কথা বলেছেন। তাই অবশ্যই আমাদেরকে গীবত থেকে বেঁচে থাকতে হবে ব্যবসার সময়।

৫. ব্যবসার সময় হিংসা বা নিন্দা করা যাবে না।

কেননা এটা মারাত্মক গোনাহ। তাই অবশ্যই আমাদেরকে হিংসা থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

৬. ইসলামে ব্যবসা করার নিয়ম হলো অনুমান ভিত্তিক ব্যবসা করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুমান ভিত্তিক ব্যবসাকে সুদের সাথে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আর সুদ যেহেতু হারাম তাই অবশ্যই অনুমান ভিত্তিক ব্যবসা করাও হারাম। আমাদেরকে অবশ্যই অনুমান ভিত্তিক ব্যবসা থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

 ৭. ছোট ছোট বিষয় নিয়ে মানুষকে গালিগালাজ করা যাবে না।

গালিগালাজ করা এটা অনেক বড় পাপ। কেননা এটা ঝগড়ার দিকে নিয়ে যায়। তাই অবশ্যই আমাদেরকে গালিগালাজ থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

৮. ব্যবসার সাথে সুদকে কখনো মেশানো যাবে না।

কেননা সুদ হল হারাম। আল্লাহতালা সরাসরি সুদকে কুরআনের মধ্যে হারাম ঘোষণা দিয়েছেন। তাই অবশ্যই আমাদেরকে সুদ থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

৯. ব্যবসার সময় অন্যকে ঠকানো যাবেনা এবং নিজেও ঠকা যাবে না।

কেননা এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম নিষেধ করেছেন। তাই অবশ্যই আমাদেরকে অন্যকে ঠকানো এবং নিজে ঠকা থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

১০. ব্যবসার সময় কারো সাথে খারাপ আচরণ করা যাবে না।

সবার সাথে ভালো ব্যবহার করা একটি মহৎ গুণ। তাই অবশ্যই মানুষদের সাথে বিশেষ করে ক্রেতাদের সাথে খারাপ আচরণ করা যাবে না। কেননা এটা ঝগড়ার দিকে নিয়ে যায়। আর ঝগড়া ফ্যাসাদ করা অনেক বড় পাপ। অবশ্যই আমাদেরকে এই পাপ থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

১১. ইসলামে ব্যবসা করার নিয়ম হলো মিথ্যা শপথ করা যাবেনা পণ্য বিক্রির সময়।

মিথ্যা অনেক বড় পাপ। আল্লাহ তায়ালা মিথ্যার বাদীর উপর অভিশাপ করেছেন। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেন আল্লাহ তাআলা তিন ব্যক্তির সাথে কেয়ামত দিবসে কোন ধরনের কথা বলবেন না পাশাপাশি তাদের প্রতি ভ্রুক্ষেপ করবেন না।

তাদেরকে পবিত্র করবেন না। তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি সেই তিন ব্যক্তির এক ব্যক্তি হলো যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম খেয়ে তার ব্যবসায়িক পণ্যকে বিক্রি করে। এ হাদিসটি রয়েছে মুসলিম শরীফে 106 নাম্বার। তাই অবশ্যই আমাদেরকে মিথ্যা কসম থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

১৩. ব্যবসায় চালাকি বা মারপ্যাচে অন্যের মাল অর্জন করা যাবে না।

ইসলামে ব্যবসা করার নিয়ম হলো চালাকি করে অন্যের মাল অর্জন করা যাবে না। কেননা এইটা এক ধরনের ধোকা। মানুষকে ঠকানো হয় নিজের লাভের আশায়। ইসলাম কখনো এ ধরনের চালাকিকে পছন্দ করেনা। পাশাপাশি সাপোর্ট করে না।

আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন : হে ঈমানদারগণ তোমরা অন্যায় ভাবে একে অপরের মাল গ্রাস করো না।

তাই অবশ্যই আমাদেরকে এই ধরনের বাটপারি এবং ধোঁকা থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

১৩ . ইসলামে ব্যবসা করার নিয়ম হলো ওজনে কম দেওয়া যাবে না

ব্যবসার সময় ওজনের কম দেয়া অনেক জঘন্য অপরাধ। কেননা আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন যে সমস্ত ব্যক্তিরা ওজনে কম দেয় তারা ধ্বংস। তাই অবশ্যই আমাদেরকে এই পাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

১৪. অহংকার থেকে আমাদেরকে বেঁচে থাকতে হবে।

কেননা অহংকার সমস্ত পাপের মূল উৎস। অর্থাৎ এই অহংকার মনের মধ্যে থাকলে অটোমেটিক ভাবে অন্যান্য পাপ নিজের কাছে চলে আসবে। তাই অবশ্যই অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে।

পরিশেষে বলব : উপরে প্রায় ১৪ টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করলাম । এগুলো হলো ইসলামে ব্যবসা করার নিয়ম । অবশ্যই আমাদেরকে ব্যবসা করার সময় এই বিষয় গুলো ফলো করতে হবে।

তাহলে অবশ্যই ব্যবসা হালাল হবে। ব্যবসার মধ্যে হারাম ঢুকবে না। আশা করি এই লেখাটি আপনার উপকার দিবে। যদি এ লেখাটি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন :-

  1. কসমেটিকস পাইকারি বাজার কোথায় কোথায় রয়েছে ?
  2. ছাত্রদের জন্য ব্যবসা আইডিয়া ১৮টি যেগুলো খুবই লাভজনক
  3. ক্ষুদ্র ব্যবসার তালিকা
  4. ঘরোয়া ব্যবসা

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment