আপনি কি মহিলাদের নামাজের নিয়ম জানতে চান ? নামাজ পুরুষ এবং মহিলা সকলের উপর সমানভাবে ফরজ। পুরুষদের যেমন নামাজের নিয়ম রয়েছে। ঠিক মহিলাদের নামাজের নিয়ম রয়েছে।
অনেকেই বলে থাকে পুরুষ এবং মহিলাদের নামাজের মাঝে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। আবার অনেকে বলে কোন পার্থক্য নেই। তবে সঠিক বিষয় হলো কিছু কিছু বিষয় পুরুষদের সাথে মহিলাদের নামাজে মিল রয়েছে আবার কিছু কিছু বিষয়ে মিল নেই বরং পার্থক্য রয়েছে। আজ আমি মহিলাদের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। যাতে করে মহিলারা নিয়ম জেনে খুব সহজে নামাজ আদায় করতে পারে।
মহিলাদের নামাজের নিয়ম
আজান বা একামত নেই মেয়েদের তাকবীরে তাহরীমা যখন বলবে তখন উভয় হাত মেয়েরা কাঁধ পর্যন্ত থাকে। এরপর হাত কাপড়ের ভিতর থেকে বের করবে না। বরং উভয় হাত কাপড়ের ভিতরে রাখবে।
হাত বাধার ক্ষেত্রে হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখবে এবং ডান হাতকে বাম হাতের পিঠের উপর স্বাভাবিকভাবেই রাখবে। ধরার দরকার নেই। উভয় হাতকে বুকের উপর বাঁধবে।
এরপর কেরাত উচ্চস্বরে পড়বে না আস্তে আস্তে পড়বে। কেরাত পুরুষদের মত পড়বে অর্থাৎ সূরা ফাতিহা পড়বে তারপর অন্য কোন সূরা মিলাবে। তারপর রুকু করবে। রুকুর ক্ষেত্রে মাথা হালকা ঝুকাবে। পুরুষদের মত বেশি ঝোকাবে না।
এবং রুকুর ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় রয়েছে সেটা হল উভয় হাতের বাহুকে পাঁজরের সঙ্গে মিলিয়ে রাখবে এবং রুকুর ক্ষেত্রে দুই পায়ের গোড়ালিকে মিলিয়ে রাখবে।
তারপর রুকুর তাসবিহ পড়বেন পুরুষদের মতই তাজবীর ক্ষেত্রে আলাদা কোনো নিয়ম নেই। এরপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে রব্বানা লাকাল হামদ বলবেন। এরপর সেজদা করবেন। সেজদা একেবারে সংকুচিত হয়ে করা । প্রসস্থ হয়ে না করা। সেজদার ক্ষেত্রে দুনো কনুইকে জমিনের সাথে মিশিয়ে রাখবে। পুরুষদের মতো উঁচু রাখবে না।
এবং সেজদার ক্ষেত্রে পুরুষদের মত দুনো পা খাড়া রাখবে না বরং ডান দিক দিয়ে দুনো পা বের করে মাটিতে বিছিয়ে রাখতে হবে। পাশাপাশি দুনো পায়ের আঙ্গুল গুলোকে যতটুক সম্ভব কেবলা মুখী রাখতে হবে। এরপর পুরুষদের মত সেজদার তাসবিহ পারবেন। আলাদা কোনো নিয়ম নেই।
যখন বসবেন তখন বাম পাশের নিতম্বের উপর বসবেন আর তখন দুই হাতের আঙ্গুল সমূহ ছড়িয়ে রাখবেন না বরং মিলিয়ে রাখবেন । এরপর আবার সেজদা করবেন তারপর তাসবিহ পড়বেন।
এভাবে প্রথম রাকাত শেষ করবেন। তারপর আবার দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবেন। ঠিক প্রথম রাকাতের মতোই পড়বেন। যখন দ্বিতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সেজদা করবেন। দ্বিতীয় সেজদা করে বসবেন।
এরপর তাশাহুদ , দরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাসুরা পড়ে সালাম ফিরাবেন। যদি আপনার দুই রাকাত নামাজ পড়ার ইচ্ছা থাকে। এভাবেই দুই রাকাত নামাজ পড়ার নিয়ম। চার রাকাত নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে একই নিয়ম ।
আরো কিছু পার্থক্য রয়েছে সেগুলো বলবো
- মেয়েরা পুরুষদের থেকে বেশি সতর ঢাকবে।
- যদি মেয়েরা জামাতের সাথে নামায আদায় করে তাহলে তারা পুরুষদের পিছনে দাঁড়াবে।
- মেয়েদের জন্য মাথা ঢাকা আবশ্যক। তাই মাথা ঢেকে নামাজ আদায় করবে। মাথা খোলা রেখে নামাজ আদায় করলে নামায হবে না।
- কোন নারী ইমাম হতে পারেনা ।
- মেয়েরা কখনো মুকাব্বির হতে পারবে না।
- ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সাথে সাথে নামায আদায় করা মেয়েদের জন্য মুস্তাহাব। কিন্তু পুরুষদের জন্য উচিত হল আজান হলে মসজিদে গিয়ে জামাতের অপেক্ষা করা।
এ সিস্টেম এই মেয়েরা নামাজ আদায় করবে।
পরিশেষে বলব : উপরে উল্লেখিত মহিলাদের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করলাম। যদি নিয়ম গুলো ফলো করেন তাহলে খুব সুন্দর ভাবে নামাজ গুলো আদায় করতে পারবেন। যদি এই লেখাটি উপকার দিয়ে থাকে । এবং ভালো লেগে থাকে তাহলে জানাবেন। বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
আরো পড়ুন :