আপনি কি জানতে চান চাশতের নামাজের নিয়ম ? চাশতের নামাজের গুরুত্ব রয়েছে। এই নামাজের সাওয়াব অনেক বেশি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এই নামাজের ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়েছেন।
এই নামাজটি পড়া হয় প্রথম প্রহরের পর থেকে নিয়ে দ্বিপ্রহরের আগ পর্যন্ত। এই কারনে এই নামাযকে বলা হয় সালাতুত দোহা। আজ আমি চাশতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা । যাতে করে নিয়ম জেনে খুব সহজেই নামাজ আদায় করতে পারেন।
চাশতের নামাজের নিয়ম
নিয়ম জানার আগে আলোচনা করব এই নামাজের ফজিলত কি , সময় কখন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব । তাহলে বিষয়গুলো আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।
চাশতের নামাজের ফজিলত
১. হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনটি বিষয়ে আমাকে ওসিয়ত করেছেন। আমি কখনো ছাড়বো না মৃত্যু পর্যন্ত।
- প্রতি মাসে তিনটি রোজা রাখতে বলেছেন।
- চাশতের নামাজ আদায় করতে বলেছেন।
- বেতের নামাজ আদায় করতে বলেছেন ঘুমাতে যাওয়ার আগে।
২. হযরত বুরাইদা রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেছেন। তিনশ ষাটটি জোড় রয়েছে মানুষের শরীরে। অতএব প্রত্যেক মানুষের জন্য কর্তব্য হলো সে জন্য প্রত্যেক জোড়ের জন্য একটি করে সদকা করে।
তখন সাহাবায়ে কেরাম রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু বললেন ইয়া রাসুল আল্লাহ কোন ব্যক্তির শক্তি আছে এ কাজ করার ? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বললেন মসজিদে কোথাও কোন ব্যক্তি এর থুতু দেখলে তার ঢেকে দাও।
রাস্তার মধ্যে কোন ক্ষতিকারক জিনিস দেখলে তা সরিয়ে ফেলো। তবে এরকম জিনিস না পেলে চাস্তের দুই রাকাত নামাজই এর জন্য যথেষ্ট। (আবু দাউদ শরীফ হাদিস নাম্বার : ৫২২২)
এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায় চাশতের নামাজ 360টি ছদকার মূল্য।
চাশতের নামাজের সময় কখন ?
চাশতের সময় হল : সূর্য যখন এক মিটার পরিমাণ উপরে উঠবে তখনই নামাজ পড়তে হয়। অর্থাৎ সূর্য যখন উঠবে তখন এশরাকের নামাজ পড়তে হয়। ইশরাকের নামাজের পর থেকে দ্বিপ্রহরের আগ পর্যন্ত এই নামাজ পড়তে পারবেন।
আরো স্পষ্ট করে বলা যায় যে সূর্য যখন স্পষ্ট ভাবে প্রকাশিত হয় তখন থেকে নিয়ে দ্বিপ্রহরের আগ পর্যন্ত এই নামাজের সময়।
যারা বিজ্ঞ তাদের মতে চাশতের সময় হল সূর্য উদয় থেকে নিয়ে জোহর পর্যন্ত যতটুকু সময় হয় এ সময় এর মধ্যবর্তী সময়। অর্থাৎ সম্পূর্ণ সময়টাকে প্রথমে যোগ করবেন তারপর ভাগ করে মধ্যবর্তী সময় বের করবেন। ওই মধ্যবর্তী সময় হলো উত্তম সময়।
আরো স্পষ্ট করে বলে যদি সকাল নয়টা থেকে এগারোটা পর্যন্ত চাশতের সময়।
চাশতের নামাজ কত রাকাত ?
কমপক্ষে চাশতের নামাজ দুই রাকাত পড়তে হয়।
চার রাকাত পড়তে পারেন। বেশির কোনো সীমা নেই। অনেকে আবার ১২ রাকাতের কথা বলেছেন। অতএব আপনার সাধ্য অনুযায়ী যত রাকাত পড়তে পারেন পড়বেন।
এ ব্যাপারে একটি হাদীস রয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবু যর রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু কে বলেন
চাশতের নামাজ তুমি যদি দুই রাকাত পড়ো তাহলে তোমাকে যারা গাফেল তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। আর যদি তুমি চার রাকাত পড়ো তাহলে তুমি যারা নেককার তাদের মধ্যে গণ্য হবে।
আর চাশতের নামাজ যদি তুমি 8 রাকাত পড়ো তাহলে তুমি যারা সফল তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আর চাশতের নামাজ যদি তুমি 10 রাকাত পড়ো। তাহলে কিয়ামতের দিন তোমার কোন গুনাই থাকবে না। আর যদি তুমি 12 রাকাত পড়ো তাহলে আল্লাহতায়ালা তোমার জন্য একটি বাড়ি তৈরি করবেন জান্নাতে।
চাশতের নামাজের নিয়ম
চাশতের নামাজের জন্য আলাদা কোনো নিয়ম নেই। অন্যান্য নামাজের মতই। স্বাভাবিকভাবে সূরা ফাতিহা ও অন্য যেকোনো কেরাত পড়বেন। যদি দুই রাকাত হয় দুনো রাকাতে এরকমভাবে পড়বেন। আর যদি চার রাকাত পড়েন তাহলে চার রাকাতে এরকম ভাবেই পড়বেন। নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নীতি নেই।
পরিশেষে বলব : উপরে চাশতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। যদি আপনি চাশতের নামাজ পড়তে চান তাহলে নিয়মগুলো ভালোভাবে ফলো করবেন। তাহলে খুব সুন্দর ভাবে নামাজ আদায় করতে পারবেন। যদি এই লেখাটি আপনার উপকারে দিয়ে থাকে। এবং আপনার ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ধন্যবাদ।
আরো পড়ুন : এশার নামাজের নিয়ম