১১টি পদ্ধতিতে পেটের মেদ কমানোর উপায় , ১০০% কার্যকরী

আপনি কি জানতে চান পেটের মেদ কমানোর উপায় ? তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য।

পেটের মেদ একটি বিব্রতকর বিষয়। বর্তমানে অধিকাংশ মানুষই অত্যাধিক পরিমাণে পেটের অতিরিক্ত চর্বির সমস্যায় ভুগছে।

পেটের অতিরিক্ত মেদ শুধু দুশ্চিন্তার কারণ‌ই নয়, বরং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। তবে ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে তাদের অধিকাংশই এটাকে গুরুত্বের সহিত নিচ্ছে না, অবহেলা করছে।

পেটের অতিরিক্ত মেদ একদিকে যেমন স্বাস্থ্যের সৌন্দর্য নষ্ট করে, অনুরূপ অন্যদিকে বিভিন্ন রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আজ আমরা পেটের মেদ কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি এই উপায় গুলো ফলো করলে ১০০% খুব সহজে আপনার পেটের মেদ কমে যাবে ।

তাই অবশ্যই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

পেটের মেদ কমানোর উপায়

Table of Contents

পেটের মেদ কমানোর উপায়

উপায় জানার আগে জানতে হবে মেদ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ । তাই আগে মেদ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ আলোচনা করব । তারপর মেদ কমানো নিয়ে আলোচনা করব ।

পেটের মেদ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণসমূহ:

যেকোন সমস্যার সমাধান সম্পর্কে অবগত হওয়ার পূর্বে ,ওই সমস্যা কারণ সম্পর্কে অবগত অতি আবশ্যক। চলুন জেনে নেই পেটে মেদ বৃদ্ধি হওয়ার কারণসমূহ:

  • মিষ্টি জাতীয় খাবার অতিরিক্ত গ্রহণ।
  • কোমল পানীয়।
  • অস্বাস্থ্যকর বাহিরের খাবার।
  • নিয়মিত রেড মিট খাওয়া।
  • ডুবো তেলে ভাজা খাবার।
  • স্যাচুরেটেড চর্বি গ্রহণ।
  • শুধু উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার পেটের মেদ বাড়ায় তা নয়, মাত্রাতিরিক্ত কালোরে যুক্ত যে কোন খাবারে পেটের মেদ বাড়তে পারে।

ওয়ের্ক ফোর্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের বর্ণনা এইযে, যখন একই তেল বারবার ব্যবহার করা হয়, তখন সেখান থেকে ট্রান্সফ্যাট উৎপাদিত হয়, ট্রান্সফ্যাট পেটের মেদ বৃদ্ধি করে।

এরপর ডায়াবেটিস, হরমোন জাতীয় সমস্যার , হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ এর মত রোগের কারণেও পেটে অতিরিক্ত মেদ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

এছাড়াও আপনার যেসব ভুলের কারণে পেটে অতিরিক্ত মেদ বৃদ্ধি পায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক :

এক নাম্বার: শারীরিক পরিশ্রম না করা।

বর্তমানে আমরা অবস্থান করেছি আধুনিক যুগে, আর আধুনিক যুগ হলো যান্ত্রিক যুগ। যন্ত্র একদিকে যেমন আমাদের বড় বড় কষ্টকর কাজ সহজ করে দিচ্ছে, অন্যদিকে আমাদেরকে গড়ে তুলছে অলস।

মানুষ দিন দিন ফ্যাটিগ হয়ে পড়ছে। পূর্বে মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অবস্থান করতে চাইলে, দীর্ঘ সময় পায়ে হেঁটে যেত। এরপর রিকশাওয়ালারা দূর থেকে দূর পায়ে রিকশা চালিয়ে যাত্রী বহন করত।

মাথার ঘাম ফেলতো, কিন্তু এখন একটি সুইচ টিপ দূর থেকে দূর পর্যন্ত যাত্রী বহন করে, বিনা কষ্টে। এরপর মানুষ , বিল্ডিং এর প্রথম তলা থেকে শুরু করে, আটতলা, 10 টাকা পর্যন্ত পায়ে হেঁটে ওঠতো।

আর এখন মানুষ লিফট ব্যবহার করে অতি সহজেই মুহূর্তের মধ্যে প্রথম তলা থেকে 10 তলায় উঠে যায় । দৈনন্দিন জীবনে আমাদের যতটুকু পরিশ্রম করা প্রয়োজন, আমরা এখন তার এক অংশ‌ও করছি না।

দুই নাম্বার: দুশ্চিন্তা

বর্তমান সময় একটি ভয়ানক রোগের নাম হল দুশ্চিন্তা। যে রোগে প্রায় সকল লোকই আক্রান্ত। এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর যে সে দুশ্চিন্তার রোগে আক্রান্ত নয়, কিন্তু এই দুশ্চিন্তা আমাদের শরীরের অনেক ক্ষতি করে।

মানুষ যখন ডিপ্রেশন এর মধ্যে থাকে, তখন তার শরীর অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি এক ধরনের হরমোন উৎপাদন করে, যেটা থেকে অত্যাধিক পরিমাণে পেটে চর্বি বৃদ্ধি হতে থাকে।

তিন নাম্বার: দীর্ঘ সময় একই স্থানে বসে থাকা।

কর্মব্যস্ত জীবনে আমরা অনেকেই 8 থেকে 10 ঘন্টা অফিসে অথবা ব্যবসা-বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে চেয়ার-টেবিলে বসে কাজ করে থাকি, এতে পেটে অতি সহজে মেদ জমে যায়, ভুড়ি গোল হতে শুরু করে।

চার নাম্বার: খাবারের পর বিশ্রাম।

আমাদের অনেকেই খাবার খাওয়ার পর কোন স্থানে বসে পড়ি বা শুয়ে পড়ি। এতে শরীরের প্রচুর পরিমাণে মেদ তৈরি হয়। খাবার খাওয়ার পর স্থির হয়ে বসে থাকালে অথবা শুয়ে পড়লে খাবার সঠিকভাবে পরিপাক হয় না।

পেটের মেদ কমানোর উপায় সমূহ:

১. লেবুর রস মিশ্রিত কুসুম গরম পানি।

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে, এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশ্রিত করুন, অতঃপর সেটা খেয়ে ফেলুন। এটা শরীরের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এবং শরীরের মেদ লাঘব করে।

২. কাঁচা রসুনের কোয়া।

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে নিয়মিত কয়েক কোয়া কাঁচা রসুন খান, এতে অতি সহজে পেটের মেদ ঝরে যাবে। এছাড়া কাঁচা রসুন শরীরে রক্ত প্রবাহ সহজ করে। পেটে মেদ একত্রিত বা জমতে দেয়না।

৩. পেটের মেদ কমানোর উপায় হলো শস্য জাতীয় খাবার।

শস্য জাতীয় খাবার আঁশ সমৃদ্ধ। যা শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি, ক্ষুধার ভাব কমাতে এবং উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারের চাহিদা কমাতে সহায়তা করে। উচ্চ আঁশসমৃদ্ধ শস্য ওজন কমায় এবং পেটের মেদ‌ও কমায়।

৪. পরিমিত লবণ

খাবারে পরিমিত লবন খাওয়া। অতিরিক্ত লবণ শরীরে পানি ধরে রাখার পরিমাণ বাড়ায়, ওজন বৃদ্ধি করে। কাঁচা লবণ একেবারেই খাওয়া যাবেনা। লবণ খেতে হলে কাঁচা লবণ ভেজে খাবেন, লবণ ক্রয়ের ক্ষেত্রে যে সকল লবণে স্বল্প পরিমাণে সোডিয়াম আছে সেসকল লবণ ক্রয় করুন।

৫. ২ দিনে পেটের মেদ কমানোর উপায় হলো অ্যালকোহল পরিত্যাগ করুন।

অ্যালকোহল পান করার দাঁড়া পেটে চর্বি জমে এবং কোমরের লাইনে চারপাশে ফ্যাট স্টোরেজ বাড়াতে পারে। অধিকাংশ অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়তে অতিরিক্ত চিনি মিশ্রিত থাকে যা অতি দ্রুত ওজন বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া অতিরিক্ত ক্যালোরি পেটের অঞ্চলে জমা হয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

৬. বেরি

পেটের মেদ কমানোর উপায় হলো পেটের চর্বি কমানোর একটি দুর্দান্ত উপায় হল বেরি। ফ্যাট যুক্ত নাস্তার পরিবর্তে বেরি জাতীয় ফল খাওয়া উচিত। বেরি জাতীয় ফল শুধুমাত্র সুস্বাদুই নয়। বরং এতে রয়েছে ফাইবার এবং এন্ট্রি এক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য‌ও সমৃদ্ধ।

৭. পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। পানি পান করার ফলে শরীরের অতিরিক্ত টক্সিন বেরিয়ে যায়। যার ফলে পেটে অতিরিক্ত মেদ জমতে সক্ষম হয়ে ওঠে না।

৮. ৩ দিনে পেটের মেদ কমানোর উপায় হলো ব্যায়াম করা।

দৈনন্দিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করুন। 30 থেকে 45 মিনিট দৌড়াদৌড়ি করুন। সক্ষম হলে সাইকেল চালাতে পারেন। এটা খুবই উপকারী স্বাস্থ্যের জন্য।

পায়ের ওপর চাপ পড়লে আস্তে আস্তে উরুর মেদ কমতে থাকবে। পাশাপাশি পেটের অতিরিক্ত মেদ কমতে শুরু করবে। পেটের মেদ কমানোর ক্ষেত্রে যোগব্যায়ামের ভূমিকা অত্যন্ত কার্যকারী। নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করলে পেটের মেদ অটোমেটিক কমে যাবে।

৯. পেটের মেদ কমানোর উপায় হলো তৃপ্তি করে খাওয়া।

খাবার সময় মনোযোগ সহকারে খাবার খাবেন। খাবার ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবেন। এতে খাবার বেশ তাড়াতাড়ি হজম হবে। গ্যাস‌ও জমবে না। খাবার খাওয়ার সময় ভিন্ন ব্যস্ততায় থাকবেন না কিংবা ভিডিও দেখবেন না ‌।

খাবার খাওয়ার সময় মোবাইল চালালে খাবারের তেমন তৃপ্তি আসে না। ফলে মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়া হয়। যার কারণে পেটের মেদ জমে যায়।

১০. মেয়েদের পেটের মেদ কমানোর উপায় হলো ঘুম নিয়ন্ত্রণ করা।

স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ঘুমের কোন বিকল্প নেই। তবে মাত্রাতিরিক্ত ঘুম শরীর জন্য খুবই ক্ষতিকর, বিশেষ করে সেটা পেটে ফ্যাট তৈরি করে। ঘুমের সময় ছাড়া বিছানায় শুয়ে থাকবেন না।

১১. গ্রিন টি।

বর্তমানে মেদ কমাতে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পানীয় হল গ্রিন টি। যা অতি সহজেই আপনার শরীর থেকে মেদ কমাতে সহায়তা করবে। প্রত্যহ রাতে ঘুমানোর পূর্বে গ্রিন টি পান করুন।

পরিশেষে বলব : উপরে পেটের মেদ কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

যদি পেটের মেদ সম্পর্কিত আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে। তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন : 

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment