প্রত্যেক বিবাহিত মানুষের চাহিদা থাকে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা। তাই অনেকের প্রশ্ন থাকে রোজা রেখে সহবাস করা যাবে কি ?
এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সাথে সাথে আজ আমি আপনাদেরকে কয়েকটি বিষয় জানাবো (১) রোজা রেখে স্ত্রীর পাশে ঘুমানো যাবে কি না ?
(২) রোজা অবস্থায় স্ত্রীর সাথে জোরপূর্বক সহবাস করলে উভয়ের রোজার হুকুম কি হবে ?
(৩) স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা ভেঙ্গে যায় ? চলুন আলোচনা শুরু করা যাক ।
Table of Contents
রোজা রেখে সহবাস করা যাবে কি ?
এ প্রশ্নের উত্তর হলো : রোজা রেখে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা যাবে না। কেননা রোজা বলা হয় পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
অতএব রোজা রেখে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা যাবে না। আর সহবাস করার দ্বারা স্বামী এবং স্ত্রীর উভয়ের রোজা ভেঙ্গে যাবে। উভয়ের উপর রোজার কাফফারা আবশ্যক হবে।
রোজার কাফফারা :-
ধারাবাহিকভাবে ৬০ দিন রোজা রাখতে হবে। আর এই ৬০ দিনের মাঝে কোন একদিন রোজা ভাঙ্গা যাবে না। যদি রোজা ভাঙ্গে তাহলে আবার নতুন করে ৬০টি রোজা রাখতে হবে।
কেউ যদি বয়সের কারণে অথবা অসুস্থতার কারণে ৬০টি রোজা না রাখতে পারে তাহলে ৬০জন মিসকীনকে দুই বেলা খাবার খাওয়াতে হবে।
যদি কোন ব্যক্তি রোজা রাখতে পারে তবুও ৬০জন মিসকীনকে খাবার খাওয়ায় তাহলে তার কাফফারা আদায় হবে না।
রোজা রেখে সহবাস করা যাবে কি জোরপূর্বকভাবে ?
রোজা অবস্থায় স্বামী যদি স্ত্রীর সাথে জোরপূর্বক ভাবে সহবাস করে তাহলে ক্ষেত্রে হুকুম হলো : স্বামী এবং স্ত্রীর উপর রোজা ভেঙ্গে যাবে। এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় : স্ত্রী রাজি না থাকা অবস্থায়
স্বামী যদি জোরপূর্বক ভাবে সহবাস করে তাহলে এক্ষেত্রে স্ত্রীর উপর কাফফারা ওয়াজিব হবে না। তবে স্বামীর উপর কাজা এবং কাফফারা উভয়টাই ওয়াজিব হবে।
রোজা রেখে স্বামী স্ত্রী পাশাপাশি ঘুমাতে পারবে কি ?
এ প্রশ্নের উত্তর হলো : হ্যাঁ অবশ্যই রোজা রেখে স্বামী স্ত্রী উভয়েই পাশাপাশি ঘুমাতে পারবে বা শুয়ে থাকতে পারবে। এতে কোনো বাধা নাই। বাধা হলো সহবাস করা। কারণ স্বামী এবং স্ত্রী একে অপরের জন্য বৈধ।
যদি কোন ব্যক্তি নিজের উপরে এতোটুকু আস্থা থাকে অথবা নিজেকে নিয়ন্ত্রিত করার শক্তি থাকে যে সে তার স্ত্রীর সাথে সহবাসের লিপ্ত হবে না। তাহলে সে ব্যক্তি তার স্ত্রীকে চুমু দিতে পারবে ।
জড়িয়ে ধরতে পারবে। চাই ফরজ রোজা থাকা অবস্থায় হোক অথবা নফল রোজা থাকা অবস্থায় হোক। এতে কোনো বাধা নেই। আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে এসব সম্পর্ক বৈধ করে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে একটি হাদীসে রয়েছে হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা অবস্থায় স্ত্রীকে চুমা দিতেন।
স্ত্রীর সাথে আলিঙ্গন করতেন। আর হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন তার যৌন আকাঙ্খাকে নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে সক্ষম ব্যক্তি। বুখারী শরীফ (১৯২৭) , মুসলিম শরীফ (১১০৬)
এই হাদিস দ্বারা এটাই বুঝা গেল রোজা রেখে স্ত্রীকে চুমা দেওয়া এবং তাকে জড়িয়ে ধরা জায়েজ আছে।
স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা ভেঙ্গে যায় ?
এ প্রশ্নের উত্তর হলো : স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাঙ্গবে না। কেননা এটা রোজা ভঙ্গের কারণ নয়। অতএব রোজা রাখা অবস্থায় যদি কারো স্বপ্নদোষ হয় তাহলে রোজা ভাঙ্গা যাবে না বরং রোজা রাখতে হবে।
পরিশেষে বলব : উপরে উল্লেখিত রোজা রেখে সহবাস করা যাবে কি ও আরো কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে যা আলোচনা করা হলো যদি এ গুলো ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।
আরো পড়ুন : ইসলাম ধর্মের উৎপত্তি কোন সময় হয় ?