ইন্টারনেট কাকে বলে ? | ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে ?

আপনি কি জানতে চান ইন্টারনেট কাকে বলে ? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

ইন্টারনেট আমাদের দৈনন্দিন কাজের সাথে জড়িত। কেমন জানি বর্তমানে আমরা ইন্টারনেট ছাড়া কিছুই বুঝি না। অথচ আমরা ইন্টারনেট সম্পর্কে কিছুই জানিনা ।

তাই আজ আমি ইন্টারনেট কাকে বলে ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। পাশাপাশি ইন্টারনেট সম্পর্কে নানান খুটি-নাটি তথ্য দিব । যাতে করে এ সম্পর্কে পরিপূর্ণ আইডিয়া পান। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক ।

ইন্টারনেট কাকে বলে

Table of Contents

ইন্টারনেট কাকে বলে ?

এটা এমন একটি নেটওয়ার্ক যেটা একে অপরের সাথে সংযুক্ত রেখেছে পৃথিবীর সমস্ত কম্পিউটারগুলোকে। আর এই নেটওয়ার্ককে বলা হয় ইন্টারনেট। আশা করি আমি আপনাদেরকে বোঝাতে পেরেছি ।

অর্থাৎ বিশেষ একটি রাউটারের মাধ্যমে পৃথিবীর সমস্ত কম্পিউটারগুলোকে একটি আরেকটা সাথে সংযুক্ত করেছে। ফলে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে। আর এই নেটওয়ার্ক হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় একটি নেটওয়ার্ক।

কেননা এই নেটওয়ার্কের সাথে সম্পূর্ণ পৃথিবী সংযুক্ত রয়েছে। এই কারণে যে কেউ পৃথিবীর একটি অংশ থেকে অপর অংশে মুহূর্তের মাঝে যোগাযোগ করতে পারে।

ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে ?

ইন্টারনেট কাজ করার জন্য তিনটা জিনিস লাগে। আর এই তিনটা জিনিসের ভিত্তিতেই ইন্টারনেট কাজ করে।

১/ একটি ডিভাইস লাগবে । অর্থাৎ কম্পিউটার বা মোবাইল যেকোনো একটা হলেই চলবে। কেননা ডিভাইস ছাড়া ইন্টারনেট কাজ করবে না ।

২/ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার দরকার অর্থাৎ ইন্টারনেট কানেকশন। এটা মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে হতে পারে

অথবা ব্রডব্যান্ড এর মাধ্যমেও হতে পারে। এই ইন্টারনেট কানেকশনকে আমাদের ডিভাইসের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। যাতে করে পুরো পৃথিবীর কম্পিউটার একটা আরেকটার সাথে সংযুক্ত হতে পারে।

৩/একটি ব্রাউজার দরকার অর্থাৎ কম্পিউটার হোক অথবা মোবাইল হোক উভয়টির ক্ষেত্রে একটি ব্রাউজার বা সফটওয়্যার লাগবে।

যেমন : গুগল ক্রোম, মজিলা ফায়ারফক্স ইত্যাদি। আর এই ব্রাউজার ইন্টারনেট কানেকশনের মাধ্যমে পুরা পৃথিবীর সমস্ত কম্পিউটারের নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করে।

আশা করি আমি আপনাদেরকে বোঝাতে পেরেছি ।

আরো পড়ুন : মোবাইলের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায়

ইন্টারনেট কিভাবে  সমস্ত কম্পিউটারকে সংযুক্ত করে ?

পৃথিবীর সমস্ত কম্পিউটারগুলোকে একে অপরের সাথে সংযুক্ত করার জন্য এক ধরনের মজবুত ক্যাবল ব্যবহার করা হয়।

আর এই কেবল সমুদ্রের নিচে প্রায় 8 লক্ষ কিলোমিটার লম্বা ভাবে বিছানো আছে।

এ ভাবেই সমুদ্র পথের মাধ্যমে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল দিয়ে পুরো পৃথিবী কে সংযুক্ত করে রেখেছে জালের মত।

ইন্টারনেট কত প্রকার ও কি কি ?

ইন্টারনেট কাকে বলে

ইন্টারনেট মূলত ছয়টি প্রকারের বিভক্ত। সেই ছয়টি প্রকার হলো : 

  1. ক্যাবল ইন্টারনেট
  2. ডায়াল- আপ ইন্টারনেট
  3. স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
  4. সেলুলার ইন্টারনেট
  5. ডিএসএল ইন্টারনেট
  6. ওয়ারলেস ইন্টারনেট

ক্যাবল ইন্টারনেট

অর্থাৎ ক্যাবলের মাধ্যমে ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটারে যে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়। তাকেই ক্যাবল ইন্টারনেট বলা হয়।

এই ইন্টারনেট কানেকশনটি সকলের কাছে জনপ্রিয়। কেননা ক্যাবলের মাধ্যমে কানেকশন এর স্পিড অনেক বেশি পাওয়া যায় পাশা পাশি নানান সুবিধা রয়েছে।

ডায়াল- আপ ইন্টারনেট

স্বাভাবিকভাবে স্ট্যান্ডার্ড মোবাইল লাইন থেকে যে ইন্টারনেটের কানেকশন পাওয়া যায়। তাকেই ডায়াল- আপ ইন্টারনেট বলে। ইন্টারনেট খুবই স্লো কাজ করে। এই কারণে এই কানেকশনটি গ্রাহকরা খুব কম পছন্দ করে।

স্যাটেলাইট ইন্টারনেট

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট হল স্যাটেলাইট। কেননা এটা মহাকাশে অবস্থিত স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেটে কানেকশন দেওয়া হয়। এই কানেকশনটি তার বিহীন কানেকশন।

সেলুলার ইন্টারনেট

আমরা আমাদের মোবাইল ফোনে যে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি তাকেই সেলুলার ইন্টারনেট বলে। ইন্টারনেট কানেকশন আমাদের সকলের কাছে জনপ্রিয় ।

কেননা এই কানেকশনের মাধ্যমে আমরা যে কোন স্থান থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারি। এ কারণে সকলের কাছে এই মাধ্যমটা অনেক জনপ্রিয়।

ডিএসএল ইন্টারনেট

এটা মূলত ডায়াল- আপের ইন্টারনেট কানেকশন এর বদলিতে এসেছে। তাই এটা ডায়াল – আপের ইন্টারনেট কানেকশন থেকে প্রায় ১০০ গুণ দ্রুত সম্পন্ন কানেকশন।

ওয়ারলেস ইন্টারনেট

পরস্পর দুইটি ডিভাইস কাছাকাছি দূরত্বে নিয়ে একটি অপরটার সাথে যে কানেকশন দেয়া হয় তাকে ওয়ারলেস ইন্টারনেট বলে।

ইন্টারনেট আবিষ্কার এর ইতিহাস

কম্পিউটার বিজ্ঞানী লিওনার্ড ক্রাইনরক তার গবেষণার একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন 1950 সালে। এটাই ছিল সর্বপ্রথম ইন্টারনেটের ব্যবহার।

1969 সালে 14 ই জানুয়ারি ক্যালোফোনিয়ায় সর্বপ্রথম যোগাযোগের জন্য একটি নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়। এটা মূলত মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের গবেষণাকারীরা তৈরি করেছিলেন।

তারপর ধীরে ধীরে এটা সম্প্রসারণ হতে থাকে। তারপর 1990 সালের শুরুর দিকে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এর আবির্ভাব ঘটে। তারপর 1990 সালের মাঝখানে এটা বাণিজ্যিক রূপ নেয়।

ইন্টারনেট এর ব্যবহার

প্রথম প্রথম ইন্টারনেটের ব্যবহার সীমিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে ইন্টারনেটের ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই।

এখানে আমরা বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারি। কয়েকটি কাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

১/ আমরা ঘরে বসে ইনকাম করতে পারি

অর্থাৎ বর্তমানে অধিকাংশ মানুষই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসে ইনকাম করছে।

যেমন অনেকেই ইউটিউবিং করে ইনকাম করছে , অনেকে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করছে আবার অনেকে ব্লগিং করে ইনকাম করছে।

আরো নানান পদ্ধতির মাধ্যমে মানুষ ঘরে বসে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইনকাম করছে।

২/ ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ করা।

অর্থাৎ আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইমেইল , ফেসবুক আরো নানান সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মুহূর্তের ভিতর বিভিন্ন মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারি।

৩/ অনলাইনে শপিং করা।

বর্তমানে মানুষ ঘরে বসে বসে অনলাইনে শপিং করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। এটা অনেক চমৎকার একটি বিষয়।

অতএব এই ইন্টারনেট এসে মানুষের কঠিন কাজকে সহজ করে দিয়েছে।

৪/ কোন কিছু জানতে চাওয়া বা শিখা

অর্থাৎ আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে এমন এমন বিষয় জানতে পারি বা শিখতে পারি যা স্বাভাবিক বই থেকে জানতে পারিনা। কারণ ইন্টারনেটে সমস্ত কিছুই পাওয়া যায়।

৫/ বিনোদন নেওয়া

অর্থাৎ বর্তমানে অধিকাংশ মানুষই ইন্টারনেট ব্যবহার করেন বিনোদন নেওয়ার জন্য , আনন্দ লাভ করার জন্য এবং অবসর সময় কাটানোর জন্য বিনোদনের মাধ্যমে।

৬/ তথ্য খোঁজার জন্য ইন্টারনেট এর ব্যবহার

অর্থাৎ বিভিন্ন দেশের সম্পর্কে অথবা বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য আমরা ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করতে পারি। এতে করে মুহূর্তের ভিতর আমরা তথ্য পেয়ে যাব।

৭/ নিউজ জানতে পারা

অর্থাৎ আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুহূর্তের ভিতর দেশের নানান খবর জানতে পারি।

ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা

ইন্টারনেট কাকে বলে

ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা রয়েছে । কিছু সুবিধা দেওয়া হল :

  • ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কারো সাথে যোগাযোগ করা যায় মুহূর্তের ভিতর
  • ঘরে বসে ইনকাম করা যায়
  • ঘরে বসে বসে রেল হোক অথবা গাড়ির টিকিট কাটা যায়
  • নিজের মন মত বিনোদন নেওয়া যায়
  • গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জানা যায় যেগুলো বইয়ের মধ্যে পাওয়া যায় না।
  • ঘরে বসে বসে কেনাকাটা করা যায়
  • ঘরে বসে বসে খাবার অর্ডার দেওয়া যায়
  • আমরা দেশের নানান খবর জানতে পারি মুহূর্তের ভিতর।

এরকম আরো অনেক ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে।

ইন্টারনেট ব্যবহারের অসুবিধা

নানা রকম অসুবিধা রয়েছে। কয়েকটি অসুবিধা তুলে ধরা হলো : 

  • বর্তমানে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মনোযোগ নষ্ট করে দিচ্ছে এই ইন্টারনেট। কেননা তারা সামাজিক যোগাযোগ ,অনলাইন গেমস থেকে শুরু করেন নানান কাজে মাত্রা অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে।
  • ই কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে কোন প্রোডাক্ট এর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় না। কেননা এখানে ভেজাল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • কম্পিউটারে ভাইরাস , হ্যাকিং থেকে শুরু করে নানান প্রবলেমের শিকার হতে হয় ইন্টারনেটের কারণে।

ইত্যাদি এরকম আরো অনেক প্রবলেমের শিকার হতে হয় এই ইন্টারনেটের কারণে। আশা করি আপনি ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন

মোট কথা : আমি এতক্ষণ ইন্টারনেট কাকে বলেইন্টারনেট কিভাবে কাজ করেইন্টারনেট এর ব্যবহার এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম।

আশাকরি আপনি বুঝতে পেড়েছেন । অতএব আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এই আর্টিকেলটি । সাথে কমেন্ট করবেন । ধন্যবান ।

FAQ

কোন দেশ প্রথম ইন্টারনেট আবিষ্কার করে ?

 সর্বপ্রথম ইন্টারনেট আবিষ্কার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত এর মাঝে যোগাযোগ ব্যবস্থা যেন বন্ধ না হয়ে যায় এই কারণে milnet নামক একটি কোম্পানি ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু করে।

ইন্টারনেট এর জনক কে ?

ইন্টারনেটকে আবিষ্কার করেন ভিনটন গ্রে ভিন্ট সার্ফ।  ইন্টারনেট আবিষ্কার হয় 1969 সালের 4 এ জানুয়ারি। তখন তার নাম ছিল Arpanet

বাংলাদেশে ইন্টারনেট চালু হয় কত সালে ?

 সর্বপ্রথম বাংলাদেশে ইন্টারনেট চালু হয় 1993 সালে। আর 1995 সালে সীমিত আকারে অফলাইন ইমেইল এর মাধ্যমে ইন্টারনেটের ব্যবহার শুরু হয়।
আর  1996 সালে মোটামুটি সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায় ইন্টারনেট এর ব্যবহার। ধীরে ধীরে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাংলাদেশের বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় 100 মিলিয়ন এর উপরে মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।

ইন্টারনেট কত সালে আবিষ্কার হয় ?

ইন্টারনেট প্রাথমিকভাবে আবিষ্কার হয় 1969 সালে 14 ই জানুয়ারি । ধীরে ধীরে এটা সম্প্রসারণ হতে থাকে।1990 সালে এটা বাণিজ্যিক রূপ নেয়।

ইন্টারনেট এর আদি নাম কি ?

ইন্টারনেট এর আদি নাম হলো Arpanet

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment