প্রকৃত রোজার ইতিহাস দলিল-প্রমাণের সাথে জেনে নিন ।

আপনি রোজার ইতিহাস সম্পর্কে কি জানতে চান ? তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য ।

রোজা হলো ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের তৃতীয় নাম্বার স্তম্ভ। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত।

এই রোজা আল্লাহতালা আমাদের উপর ফরজ করেছেন। বিশেষ করে রমজান মাসে আমাদের রোজা রাখতে হবে এটা ফরজ।

এই রোজা শুধু আমাদের উপর ফরজ করেন নাই । বরং আল্লাহ তাআলা আমাদের পরবর্তী সমস্ত মানব জাতির উপর ফরয করেছিলেন।

তাই আমাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চায় এই ফরজ ইবাদতের ইতিহাস সম্পর্কে। এই জন্য অনেক খুজাখুজি করে প্রকৃত ইতিহাস জানার জন্য ।

তাই আজ আমি  রোজার ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব প্রমান সহকারে । যাতে করে কোন ধরনের শংসয় বা সন্দেহ তৈরী না হয় ।

অতএব আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলেই প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবেন ।

রোজার ইতিহাস

রোজার ইতিহাস প্রমাণ সহকারে

রোজার প্রচলন ঘটে সর্বপ্রথম মানব হযরত আদম আঃ থেকে। আল্লাহ তাআলা হযরত আদাম আলাইহিস সালামের উপর ফরজ করে রোজার প্রচলন শুরু করেন।

আমাদের পূর্ববর্তী সমস্ত নবী এবং তার উম্মতের উপর রোজার বিধান ফরজ করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন :

হে ঈমানদারগণ , তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে । যেরকম রোজা ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী সকলের উপর। যাতে করে তোমরা খোদাভীরু হতে পারো। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে রুহুল মাআনীতে বলা হয়েছে।

পূর্ববর্তী দ্বারা উদ্দেশ্য হলো হযরত আদম আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুরু করে হযরত ঈসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত সমস্ত নবী রাসূল ও তার উম্মতদেরকে বুঝানো হয়েছে।

 Read more : তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও সময়: সঠিক উপায়ে বিস্তারিতভাবে জানুন !

রোজার সূচনার ইতিহাস

আল্লাহতালা হযরত আদম আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জান্নাতে একটি গাছের ফল খেতে নিষেধ করেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন :

হে আদম, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাকো। এবং যেখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও , পরিতৃপ্ত সরকারে খাও।

তবে তোমরা এই গাছের কাছে যেও না। তাহলে জালেমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।

(সূরা বাকারা, আয়াত:৩৫) তাফসীরবীদগন বলেন : এটাই ছিল ইতিহাসের প্রথম রোজা।

রোজার সূচনা। শয়তানের ধোঁকায় পড়ে হযরত আদম আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও হাওয়া আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওই গাছের ফল খেয়ে ফেলেছিল।

এর ফলে আল্লাহ তাআলা তাদের পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিলেন। অতঃপর তারা ওই ভুলের জন্য অনুতপ্ত হন। এবং আল্লাহর কাছে তওবা করেন।

তাদের ভুলের কাফফারা হিসেবে ধারাবাহিক ৪০ বছর রোজা রেখেছিলেন। আদম আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর যত নবী রাসুল এসেছিলেন তাদের সময় ও রোজার বিধান ছিল। কিন্তু তাদের রোজা রাখার পদ্ধতি অন্যরকম ছিল।

নবীদের রোজা রাখার পদ্ধতি

  • হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন : হজরত নুহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১ শাওয়াল ও ১০ জিলহজ্জ বাদ দিয়ে সারা বছর রোজা রাখতেন।
  • হযরত মুসা আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর তাওরাত কিতাব অবতীর্ণ হওয়ার আগে ৩০ দিন রোজা রাখতেন। তারপর তাওরাত কিতাব অবতীর্ণ হওয়ার পরে আল্লাহ তাআলার নির্দেশে আরো দশ দিন বাড়িয়ে মোট ৪০ দিন রোজা রাখা শুরু করলেন।
  • হযরত ইদ্রিস আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরা বছর রোজা রাখতেন।
  • হযরত দাউদ আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন পর একদিন রোজা রাখতেন।

রোজার সর্বশেষ বিধান তথা রমজানের রোজার ইতিহাস

আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় আগমন করার পর শুধু আশুরার রোজা রাখতেন।

আল্লাহ তাআলা ১০ শাবান দ্বিতীয় হিজরীতে রমজানের রোজা ফরজ করে কোরআনে আয়াত নাযিল করেন।

রমজানের রোজার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা সূরা বাকারায় ১৮৫ নাম্বার আয়াত নাযিল করেন।

এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর আশুরার রোজা পালন মানসুখ হয়ে যায়।

দ্বিতীয় হিজরী সনে রোজা ফরজ হওয়ার পর থেকে মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতেরা প্রতি বছরে একমাস করে রোজা পালন করে আসছে।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রমজানের রোজা ঠিক ভাবে আদায় করার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন করার তৌফিক দান করুন। আমিন

এ ব্যপারে আরো বিস্তারিত জানতে নিচের ভিডিওটি দেখতে পারেন ।

পরিশেষে বলব : উপরে উল্লেখিত রোজার ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম । আশা করি এ সম্পর্কে লেখা আপনাদের ভাল লেগেছে।

আপনাদের প্রশ্নের উওর পেয়ে গেছেন। তাই আপনাদের মূল্যবান কমেন্ট করে আমাদেরকে উৎসাহিত করবেন। ধন্যবাদ।

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment