সঠিক উপায়ে যৌথ ব্যবসা করার নিয়ম – ২০২৪

আপনি কি জানতে চান যৌথ ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে ? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

যদি যৌথ ব্যবসা নিয়ম অনুযায়ী করতে পারেন তাহলে আপনি খুব দ্রুত সফলতা লাভ করতে পারবেন। অন্যথায় সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছতে পারবেন না।

কেননা যৌথ ব্যবসায় ধোঁকাবাজি, দুর্নীতি, ফাঁকিবাজি, অলসতা ইত্যাদি নানান অসুবিধা রয়েছে।

তাই অবশ্যই আপনাকে যৌথ ব্যবসা শুরু করার আগে নিয়ম জানতে হবে যাতে করে আপনি দুর্নীতি , ফাঁকিবাজ ও বাটপারির মাঝে না পড়েন বরং সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছে যান।

তাই আজ আমি যৌথ ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। প্রত্যেকটি খুঁটিনাটি বিষয়গুলো তুলে ধরব যাতে করে আপনি কোনভাবেই দুর্নীতি বা ফাঁকিবাজের মাঝে না পড়েন।

অতএব সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

যৌথ ব্যবসা করার নিয়ম

যৌথ ব্যবসা করার নিয়ম ২০২৪

নিয়ম বলার আগে যৌথ ব্যবসা কি এ নিয়ে আমি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। যাতে করে যৌথ ব্যবসা সম্পর্কে আপনার পরিপূর্ণ ধারণা হয়ে যায়।

যৌথ ব্যবসা কি ও কেন প্রয়োজন ?

অর্থনীতির পরিভাষায় শ্রম এবং পুঁজির সংমিশ্রণকে যৌথ ব্যবসা বলে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট পরিমাণ পুঁজিকে শ্রমের মাধ্যমে লাভজনক অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। উদাহরণ দিলে আরো স্পষ্ট হবে।

যেমন : একজন লোক ইচ্ছা করছে সে কোন একটি ব্যবসা করবে। এই ব্যবসা করার জন্য সর্বপ্রথম তার প্রয়োজন পড়বে পুঁজি। আর পুঁজি বলতে শুধু টাকাকে বুঝায় না। বরং কাঁচামাল , জমি , যন্ত্রপাতি ইত্যাদিকেও পুঁজি বলা হয়।

আর শ্রম বলতে শুধু শারীরিকভাবে কাজ করাকে শ্রম বলে না বরং বুদ্ধি , বয়স, অভিজ্ঞতা, কাজের দক্ষতা ইত্যাদিকেও শ্রম বলে। অতএব আমরা ব্যবসার ক্ষেত্রে যৌথ বলতে বুঝি শ্রম এবং পুঁজিকে মিলিত করা।

যখন কোন একজন ব্যক্তি ব্যবসা শুরু করতে চায় তখন তার কাছে উপরোক্ত দুইটি বিষয় তথা পুজি এবং শ্রম একসাথে লাগবে। তাহলে সে পরিপূর্ণভাবে একটি ব্যবসা শুরু করতে পারবে।

এখন যদি তার কাছে শ্রম এবং পুঁজির যেকোনো একটি থাকে তখন প্রয়োজন পড়ে যৌথ ব্যবসার। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন যৌথ ব্যবসা কি এবং কেন প্রয়োজন।

পরিপূর্ণভাবে যৌথ ব্যবসা করার নিয়ম

যৌথ ব্যবসা শুরু করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে আপনার পার্টনার সম্পর্কে কয়েকটি বিষয় যাচাই করতে হবে । কেননা ব্যবসার সফল হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার পার্টনার বা অংশীদার অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি আপনি বিষয়টি খুব সিরিয়াসলি ভাবে নিবেন।

পাঁচটি বিষয়ে অংশীদার ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে হবে

  1. আপনার অংশীদার ব্যক্তির ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে প্রথমেই ভালোভাবে জানতে হবে। যেমন : সে কোন পারিবারিক সমস্যায় ভুগছে কিনা বা তার ব্যক্তিগত কোন সমস্যা আছে কিনা ইত্যাদি নানান বিষয়।
  2. আপনার অংশীদারের এই ব্যবসায় কতটা আগ্রহ আছে ? কেননা একটি ব্যবসার সফলতার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আগ্রহ কাজ করে। যদি আগ্রহ না থাকে তাহলে ওই ব্যবসা সফলতা লাভ করা যায় না। তাই অবশ্যই এ বিষয়টি লক্ষ্য করবেন।
  3. আপনি অংশীদারের কাছে কতটুকু প্রত্যাশা করেন এবং অংশীদার আপনার কাছে কতটুকু প্রত্যাশা করে এই বিষয়টি অবশ্যই স্পষ্ট হতে হবে।
  4. আপনি যে ব্যবসা করতে চাচ্ছেন ওই ব্যবসা সম্পর্কে আপনার অংশীদারের অভিজ্ঞতা আছে কিনা এ বিষয়ে অবশ্যই যাচাই করবেন ? কেননা আপনার অংশীদারের যদি কোন অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে ব্যবসার সমস্ত চাপ আপনার উপর এসে পড়বে। এতে করে ধীরে ধীরে আপনার মাঝে এবং আপনার অংশীদারের মাঝে বিশাল এক ফাটল তৈরি হবে।
  5. আপনার অংশীদার কিভাবে আপনাকে টাকা দিয়েছে অর্থাৎ তার টাকার উৎস কোথায় ? এ ব্যাপারে যাচাই করতে হবে । সে কি ঋণ করে টাকা দিয়েছে নাকি তার নিজের টাকা। যদি ঋণ করে দিয়ে থাকে তাহলে কিছুদিন পরেই আপনার কাছে টাকা চাইতে থাকবে। মোট কথা : এই ব্যাপারে অবশ্যই আপনি যাচাই করুন।

যৌথ ব্যবসায় সফলতা লাভ করা ও স্থায়িত্ব করার জন্য কয়েকটি বিষয়ে ফলো করতে হবে ।

  • নিয়মিত ব্যবসা নিয়ে মিটিং করতে হবে। বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। পাশাপাশি এর সমাধান কি এ নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
  • হিসাবের ব্যাপারে সব সময় স্বচ্ছ থাকতে হবে। কোন ধরনের গোজামিল থাকা যাবে না।
  • একজন আরেকজনের প্রতি পরিপূর্ণভাবে আস্থা , বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা থাকতে হবে। তাহলে কোন ধরনের সমস্যা তৈরি হবে না।

মোটকথা : উপরোক্ত নিয়ম গুলো ফলো করে যদি ব্যবসা শুরু করতে পারেন তাহলে খুব সহজেই অল্প দিনে যৌথ ব্যবসায় সফলতা লাভ করতে পারবেন। আশা করি প্রত্যেকটি নিয়ম গুরুত্বসহকারে নিবেন।

যৌথ ব্যবসা ইসলামিক ভাবে বৈধ আছে কিনা ?

হ্যাঁ যৌথ ব্যবসা ইসলামিক ভাবে বৈধ আছে। তবে শর্ত হলো উভয়ের মাঝে লাভ বা মুনাফার বন্টন হবে শতকরা হারে।

নির্দিষ্ট অংশ বা টাকার শর্ত করা যাবে না। অতএব যদি ব্যবসার মধ্যে কোন ধরনের ক্ষতি হয় তাহলে লভ্যাংশের টাকা থেকে ওই ক্ষতি পূর্ণ করা হবে।

তারপর আসল মূলধন থেকে ওই ক্ষতিপূরণ করা হবে। আশা করি আপনি বিষয়টি ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছেন।

পরিশেষে বলবো : উপরে যৌথ ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো। আশা করি নিয়মগুলা আপনি পরিপূর্ণভাবে বুঝতে পেরেছেন।

যদি এই আর্টিকেল থেকে আপনি উপকার পেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন :-

  1. অনলাইনে পণ্য বিক্রয় করে আয় করুন
  2. উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় | সফল উদ্যোক্তা হওয়ার মূলমন্ত্র
  3. ফ্লেক্সিলোড ব্যবসা করার নিয়ম

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment