অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ২০২৩

আপনি কি অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে চান ? তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য।

ভোটার আইডি কার্ড অনেক গুরুত্বপূর্ণ । কেননা নানা রকম কাজে লাগে এই ভোটার আইডি কার্ড।

অনেক সময় বিভিন্ন কারণে ভুল হয়ে যায়। ফলে নানারকম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

আপনি জেনে খুশি হবেন যে বর্তমানে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করা যায়।

আজ আমি বিস্তারিতভাবে বলব কিভাবে আপনি অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে পারবেন। যাতে করে নিজে নিজেই খুব সহজে সংশোধন করতে পারেন।

অবশ্যই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

যে সমস্ত ক্ষেত্রে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে পারবেন। সেগুলো হলো :

  • নিজের ব্যক্তিগত তথ্য এর ক্ষেত্রে সংশোধন করতে পারবেন।
  • ঠিকানা সংশোধন করতে পারবেন।
  • এলাকা পরিবর্তন করতে পারবেন।
  • ছবি পরিবর্তন করতে পারবেন।
  • নাম পরিবর্তন করতে পারবেন।
  • পিতা- মাতার নামের ক্ষেত্রেও সংশোধন করতে পারবেন ।

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে services.nidw.gov.bd/ প্রবেশ করতে হবে। এরপর রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

যখন আপনি রেজিস্ট্রেশন করে ফেলবেন তখন আপনি লগইন পেজে চলে যাবেন। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর আপনি যে পেজে যাবেন ওই পেজকে স্ক্রল করে নিচে নামুন। সেখানে লগইন অপশন দেখতে পারবেন।

আপনার ইউজারনেম অথবা এনআইডি নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন। লগইন করার পর ঠিক এরকম একটি পেজ দেখাবে।

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

এরপর উপরে এডিট বাটন পাবেন সেখানে ক্লিক করুন। এডিট বাটনে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে এরকম একটি পেজ দেখাবে। এই পেজে আপনাকে পরিবর্তন করার জন্য চার্জ দেওয়ার কথা বলবে।

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

এরপর যদি আপনি ৩৩৩৩ অপশনে ক্লিক করেন। তাহলে আপনাকে এডিট প্রোফাইল অপশনে নিয়ে যাবে। এখানে আপনি প্রত্যেকটি তথ্যের সাথে খালি বক্স পাবেন‌। আপনি যে সমস্ত তথ্য পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন ও সমস্ত তথ্য এর ক্ষেত্রে ওই খালি বক্সে ক্লিক করুন। তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই ওই বক্সটি টিক মার্কযুক্ত হয়ে যাবে।

এরপর সেখানে এডিট একটি অপশন পাবেন। এরপর আপনি যে সমস্ত তথ্য পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন ওই সমস্ত তথ্য পরিবর্তন করুন। এরপর পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন।

আপনাকে আর একটি পেজে নিয়ে যাবে। এখানে আগের তথ্য এবং আপনি যে পরিবর্তন করেছেন এ সমস্ত তথ্য দেখাবে। অর্থাৎ দুনো তথ্য দেখাবে। এরপর আপনি আবার পরবর্তি অপশনে ক্লিক করুন। আপনাকে আরেকটি পেজে নিয়ে যাবে।

এই পেজের নাম হল ট্রানজেকশন । অর্থাৎ আপনি যে সমস্ত তথ্য পরিবর্তন করেছেন এসব তথ্যের জন্য কত টাকা প্রয়োজন হবে তা এখানে দেখতে পারবেন। এইটার পরিশোধ করা না পর্যন্ত আপনি পরবর্তী স্টেপে যেতে পারবেন না। আগে আপনাকে টাকা পরিশোধ করতে হবে ।

এর জন্য আপনি মোবাইল অথবা ডিজিটাল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে পারবেন।

আমি কয়েকটি ব্যাংকের নাম দিচ্ছি।

  • রকেট
  • বিকাশ
  • মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড
  • ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
  • বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লিমিটেড
  • ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড 

রকেট এর মাধ্যমে ফি দেওয়ার নিয়ম

সর্বপ্রথম আপনি রকেট এপে প্রবেশ করবেন। এরপর pay Bill নামক অপশনে প্রবেশ করুন। এরপর 1000 লিখে সার্চ দিলে EC Bangladesh নামক অপশনটি পাবেন।

এই অপশনটি সিলেক্ট করুন। সিলেক্ট করার পর আপনাকে নতুন আরেকটি পেজে নিয়ে যাবে। এখানে আপনাকে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার দিতে বলবে ।

তারপর আপনার টাকা পাঠাতে হবে রকেটের মাধ্যমে। এরপর application type এই লেখাটি দেখতে পারবেন। আপনি লেখার উপর ক্লিক করবেন। তখন অনেকগুলো অপশন পাবেন।

এখানে আপনার প্রবলেম অনুযায়ী নাম্বার সিলেক্ট করতে হবে। নাম্বার সিলেক্ট করা হয়ে গেলে pay for নামক বাটনে ক্লিক করুন। আপনি যদি আপনার নিজের ভোটার আইডি কার্ডের জন্য সংশোধন ফি টা প্রদান করে থাকেন তাহলে self নামক অপশনে ক্লিক করুন।

আর যদি আপনি অন্য কারো জন্য সংশোধন ফি প্রদান করে থাকেন তাহলে other নামক অপশনে ক্লিক করুন। অন্যের জন্য করলে অন্য ব্যক্তির মোবাইল নাম্বার চাবে।

এখানে ওই ব্যক্তির মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। অ্যামাউন্ট কত তা লিখতে হবে। অ্যামাউন্ট সংখ্যা লিখে দিবেন। এরপর validate নামক অপশনে ক্লিক করবেন।

তারপর স্বাভাবিকভাবে পিন নাম্বার চাবে। আপনি পিন নাম্বার দিয়ে ওকে বাটনে ক্লিক করে দিবেন। এভাবে আপনার সংশোধন ফি দেওয়া হবে। টাকা প্রদান করার পরে আপনাকে একটি রিসিট দেবে এই রিসিটটা সংরক্ষনে রাখুন।

টাকা পাঠানোর পর পরবর্তী ধাপগুলো

এখন আবার আপনি আপনার সেই ভোটার আইডি কার্ডের সংশোধনের স্থানে আসুন। অর্থাৎ ট্রানজেকশন এর সেই পেজটিতে। তারপর এই পেইজটি রিলোড করুন।

রিলোড করার পর সঙ্গে সঙ্গে দেখতে পারবেন আপনার সংশোধনের জন্য জমাকৃত সেই ফি । এবার আপনি নিচে রেগুলার অপশনটি সিলেক্ট করবেন। তারপর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

এখন আপনাকে কাগজপত্র জমা দিতে হবে। অর্থাৎ যে সমস্ত তথ্যের ভিত্তিতে আপনি জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করলেন ঐ সমস্ত তথ্যের ডকুমেন্ট দিতে হবে। আইডি কার্ড সংশোধন করার পূর্বে ঐ তথ্যগুলো স্ক্যানিং কম্পিউটারে রেখে দিবেন। এরপর আপনি পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন। এখানে আপনাকে সম্পূর্ণ ভোটার আইডি কার্ড দেখাবে।

অর্থাৎ আপনি যে সমস্ত তথ্য গুলো পরিবর্তন করেছেন সেগুলো ঠিক আছে কিনা , কোনো ভুল আছে কিনা পরিপূর্ণভাবে আপনাকে যাচাই করতে হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনি সাবমিট অপশনে ক্লিক করুন।

তারপর নতুন করে আবার প্রফাইল পেজ দেখতে পারবেন। এরপর আপনি বিস্তারিত তথ্য বাটনে ক্লিক করবেন। আপনাকে আরেকটি নতুন পেজে নিয়ে যাবে।

সেখান থেকে আপনি পেজটি ডাউনলোড করুন। ওই পেজটি পিডিএফ আকারে ডাউনলোড হবে। এই ফাইলটি প্রিন্ট করে সংগ্রহ করুন। যখন আপনাকে এসএমএসের মাধ্যমে জানাবে যে আইডি কার্ডটি সংশোধন হয়ে গিয়েছে তখন আপনি ওই প্রিন্ট কপি নিয়ে সংশোধিত আইডি কার্ড আনতে যাবেন‌।

পরিশেষে বলব : উপরে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। যদি আপনি প্রতিটি বিষয় একের পর এক ধাপ অনুসরণ করেন তাহলে কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই আপনার প্রয়োজনীয় ভোটার আইডি কার্ডটি সংশোধন করতে পারবেন।

আশাকরি এই লেখাটি আপনাদের উপকারে দিবে। যদি উপকার দিয়ে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন : মোবাইল নাম্বার দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে ?

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে মোটামুটি ২০ থেকে ২৫ দিন লাগে ।

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment