বিকাশ ব্যবসা করার নিয়ম – ২০২৪ | বিকাশ এজেন্ট হওয়ার নিয়ম

আপনি কি জানতে চান বিকাশ ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে ? তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে বিকাশ। নানা প্রয়োজনে আমাদের বিকাশ অনেক কাজে লাগে।

বর্তমানে বিকাশের অনেক চাহিদা রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও  এর চাহিদা প্রচুর থাকবে। আজ লক্ষ লক্ষ মানুষ এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে বিকাশে ব্যবসা করছে এবং তারা সফলও হচ্ছে । অতএব আপনিও চাইলে এই লাভজনক ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন ।

তাই আজ আমি বিকাশ ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করব।যাতে করে খুব সহজে এই লাভজনক ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক ।

বিকাশ ব্যবসা করার নিয়ম

বিকাশ ব্যবসা করার নিয়ম ২০২৪

বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে  বিকাশ। ছোট থেকে বড় সকলেই একনামে চিনে মোবাইল ব্যাংকিং হিসেবে বিকাশকে। 

অতএব আপনি যদি বিকাশের ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে অবশ্যই  নিয়ম ফলো করতে হবে । খুব দ্রুত সফলতা লাভ করবেন এবং প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আরেকটি বিষয় :  বিকাশের ব্যবসা করার জন্য অবশ্যই আপনাকে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করতে হবে । আর এর জন্য  বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে। তাহলে আরো বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

নিচে কয়েকটি নিয়ম দেওয়া হল :

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

আপনি যদি বাস্তবিকপক্ষে বিকাশের ব্যবসা করে প্রচুর পরিমাণে লাভ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিকাশের এজেন্ট হতে হবে।

বিকাশের এজেন্ট হওয়ার জন্য কিছু নিয়ম রয়েছে। নিয়ম গুলো ফলো করে খুব সহজেই আপনি বিকাশের এজেন্ট হতে পারবেন।

বিকাশ এজেন্ট হওয়ার নিয়ম

  • বিকাশের এজেন্ট হওয়ার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে একটি ফরম পূরণ করতে হবে। ফরম এর জন্য এখানে ক্লিক করুন বিকাশ ফরম
  • অথবা আপনার কাছের এলাকায়  বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিস থেকে ফরম পূরণ করতে পারেন।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র/ড্রাইভিং লাইসেন্স/জন্ম নিবন্ধন/পাসপোর্ট এগুলোর যেকোনো একটির ফটোকপি অবশ্যই লাগবে।
  • মোবাইল নাম্বার অর্থাৎ যে সিমে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়নি।
  • দোকানের ট্রেড লাইসেন্স
  • আপনার পরিপূর্ণ ঠিকানা দিতে হবে
  • যোগাযোগের জন্য নাম্বার দিতে হবে
  • ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর নাম দিতে হবে
  • টিন সার্টিফিকেটের ফটোকপি
  • আবেদনকারীর তিন কপি ছবি লাগবে।

এই বিষয়গুলো বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য অবশ্যই লাগবে।

বিকাশের ব্যবসায় লাভ কেমন ?

বিকাশ কম্পানি আপনাকে বিকাশের এজেন্ট হিসেবে দুই পদ্ধতিতে কমিশন দিবে।

  1. বিকাশের টাকা লেনদেন করবেন কোডের মাধ্যমে
  2. টাকা লেনদেন করবেন এজেন্ট অ্যাপ এর মাধ্যমে

কোডের মাধ্যমে বিকাশের টাকা লেনদেন 

বিকাশের টাকা লেনদেনের জন্য নির্দিষ্ট কোড রয়েছে । সেটা হল :  *247#  যদি এই কোডের মাধ্যমে লেনদেন করেন ।

  • আপনাকে বিকাশ কোম্পানি ১০০০ টাকার জন্য ৪.১০ টাকা কমিশন দিবে।
  • এই হিসেবে আপনি যদি ১০০০০ টাকা লেনদেন করেন তাহলে কমিশন পাবেন ৪১ টাকা।
  • আর যদি ৫০০০০ টাকা লেনদেন করেন তাহলে কমিশন পাবেন –২০৫ টাকা।
  • যদি ১০০০০০ টাকা লেনদেন করেন তাহলে আপনি কমিশন পাবেন —–৪১০ টাকা।

অ্যাপের মাধ্যমে বিকাশের  টাকা লেনদেন 

অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করলে কমিশন বেশি দেওয়া হয়। পাশাপাশি আবার অতিরিক্ত কমিশন দেওয়া হয়।

  • এই হিসেবে ১০০০ টাকা অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করলে কমিশন পাবেন ৪.৩০ টাকা। পাশাপাশি অতিরিক্ত কমিশন হিসেবে দেয়া হবে ০.২০ টাকা। অতএব বুঝা গেল অ্যাপের মাধ্যমে যদি ১০০০ টাকা লেনদেন করা হয় তাহলে মোট কমিশন পাওয়া যাবে ৪.৫০ টাকা।
  • অ্যাপের মাধ্যমে যদি ১০০০০ টাকা লেনদেন করা হয় তাহলে কমিশন দেয়া হবে ৪৩ টাকা।
  • আর যদি অ্যাপের মাধ্যমে ১০০০০০ টাকা লেনদেন করা হয় তাহলে কমিশন দেওয়া হবে মোট ৪৫০ টাকা।

অতএব আমরা সকলেই চেষ্টা করব বিকাশ এজেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করতে। কেননা এর দ্বারা কমিশন বেশি পাওয়া যায়। আশা করি এই বিকাশ ব্যবসা করার নিয়ম বুঝতে পেরেছেন ।

বিকাশ এজেন্ট এর সুবিধা

 এজেন্টদের জন্য কিছু সুবিধা রয়েছে।

  1. বিকাশ DSO থেকে খুব সহজেই টাকা তুলতে পারবেন আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী।
  2. নির্দিষ্ট কোন লিমিট ছাড়াই টাকা লেনদেন করতে পারবেন বিকাশ এজেন্ট নাম্বারের কারণে।
  3. আপনি কমিশন পাবেন যদি বিকাশ এজেন্টের তালিকা থেকে আউট হন তবুও।

বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ

  • এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনার লেনদেনকে নিরাপদ করে পাশাপাশি আরো সহজ করে।
  • আরেকটি লাভ হলো এই অ্যাপের মধ্যে আপনি প্রতিদিনের লেনদেনের একটা চমৎকার তালিকা পাবেন। পাশাপাশি পূর্বের লেনদেন এর তালিকাও পাবেন।
  • বিকাশের দুই ধরনের অ্যাপ রয়েছে একটি হলো স্বাভাবিক গ্রাহকদের জন্য অ্যাপ। আরেকটি হলো বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ। বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ এর মাধ্যমে লেনদেন করলে কমিশন বেশি পাওয়া যায়।

অতএব আপনি যদি বিকাশ এর ব্যবসা করে প্রচুর  লাভ করতে চান এবং সহজভাবে করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। এখানে ক্লিক করুন ডাউনলোড বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ। আশা করি এই বিকাশ ব্যবসা করার নিয়ম বুঝতে পেরেছেন ।

বিকাশের ব্যবসার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে 

  1. প্রতিদিন কমপক্ষে 2000 টাকা পর্যন্ত বিকাশে লেনদেন করতে হবে
  2. আপনার এজেন্ট একাউন্টে কমপক্ষে 7000 টাকা  থাকতে হবে । তাহলে আপনি বিকাশের ব্যবসা করতে পারবেন।
  3. বিকাশের পারসনাল একাউন্ট গ্রাহকদেরকে খুলে দিতে হয়।

এ শর্ত গুলো  যদি আপনি পূর্ণ করতে পারেন তাহলে  খুব সহজেই  বিকাশের ব্যবসা করতে পারবেন এবং প্রচুর টাকা লাভ করতে পারবেন।

বিকাশের ব্যবসা করার জন্য জায়গা নির্ধারণ

বিকাশের ব্যবসার জন্য সবচেয়ে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সেটা হল একটি জায়গা নির্ধারণ করা। জায়গা নির্ধারণ করার জন্য কয়েকটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে

  • এমন একটি স্থান বাছাই করতে হবে যে স্থানে সব সময় লোকজন থাকে।
  • রাস্তার পাশে বা মেইন রোডের পাশে দোকান নেবেন ভিতরের কোন দোকান নিবেন না।
  • বাজারে দোকান  নির্ধারণ করবেন।
  • শপিং মল , হাসপাতাল এরকম স্থানে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
  • বাস স্ট্যান্ড , টিকিট কাউন্টার ইত্যাদি।

দোকান নির্ধারণ করা ক্ষেত্রে অবশ্যই উপরের স্থান গুলোর দিকে খেয়াল করে দোকান নির্ধারণ। কেননা আপনার দোকান যত ভালো পজিশনে হবে আপনার লেনদেন তত বেশি হবে। আমার যত লেনদেন হবে তত টাকা ইনকাম হবে। আশা করি এই বিকাশ ব্যবসা করার নিয়ম বুঝতে পেরেছেন ।

বিকাশের ব্যবসার জন্য কোন কোন বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরী ?

এমন কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যে সমস্ত বিষয়ে অবশ্যই আপনাকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে অন্যথায়  ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরেকটি  বিষয় বর্তমানে প্রচুর পরিমাণ বিকাশ একাউন্ট হ্যাকিং হচ্ছে কিংবা প্রতারক চক্র বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে মানুষের বিকাশ একাউন্ট থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ।এই কারণে অবশ্যই আপনাকে কয়েকটি বিষয় সতর্ক থাকতে হবে।

  1. নাম্বার লেখার সময় অবশ্যই ভালো ভাবে চেক করবেন। অন্যথায় ভুল নাম্বারে চলে যাবে।
  2. প্রত্যেক লেনদেনের পরে আপনার ব্যালেন্স চেক করবেন।
  3. আপনার পিন নাম্বার সব সময় গোপন রাখবেন
  4. গ্রাহকদের কাছে থেকে সব সময়  কাগজপত্র বুঝে নিবেন।
  5. আপনার একাউন্টের ব্যালেন্স কখনো কাউকে জানাবেন না।
  6. বিভিন্ন প্রতারক চক্রের কৌশল থেকে সতর্ক থাকবেন।
  7. গ্রাহকদের নাম্বারও কাউকে দেখাবেন না । কেননা এর দ্বারা প্রতারক চক্ররা বিভিন্ন রকমের কৌশল অবলম্বন করে।

পরিশেষে বলব : অধিকাংশ মানুষ বিকাশের মাধ্যমে বর্তমানে লেনদেন করছে। মোবাইল ব্যাংকিং এর চাহিদা ধীরে ধীরে বাড়ছে।

অতএব আপনি বিকাশের ব্যবসা করে অনেক লাভবান হতে পারেন। উপরে উল্লেখিত বিকাশ ব্যবসা করার নিয়ম যদি ভালো লাগে তাহলে জানাবেন। শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।।

আরো পড়ুন :-

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে ?

বিকাশের এজেন্ট হতে কোন টাকা লাগে না।  বরং এটা বিকাশের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ ফ্রি সার্ভিস। তবে এজেন্ট সিম নেওয়ার জন্য টাকা লাগতে পারে তবে সেটা পরিমাণে কম। এক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধান থাকবেন। কিছু কিছু লোকেরা টাকা নিয়ে থাকে এজেন্ট হওয়ার জন্য।

পার্সোনাল বিকাশ দিয়ে ব্যবসা কি করা যায় ?

পার্সোনাল বিকাশ একাউন্ট দিয়ে ব্যবসা করা যায় না। যদি আপনি বিকাশের ব্যবসা করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এজেন্ট একাউন্ট লাগবে। কেননা পার্সোনাল বিকাশ একাউন্ট দিয়ে ব্যবসা করা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিকাশ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এটা অবৈধ। যদি তারা জানতে পারে তাহলে আপনার কাছ থেকে আর্থিক জরিমানা আদায় করতে পারে। অতএব আপনি এই কাজ থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন।

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment