দ্রুত পেট ব্যাথা কমানোর উপায় , ১০০% কার্যকরী টিপস

আপনি কি জানতে চান দ্রুত পেট ব্যাথা কমানোর উপায় সম্পর্কে ? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

পেট ব্যথা একটি কমন সমস্যা। অধিকাংশ মানুষেরই এই পেট ব্যথা হয়ে থাকে। তবে এই পেট ব্যথা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেশি গুরুতর না বরং স্বাভাবিক কারণে হয়ে থাকে।

তাই সর্বপ্রথম পেট ব্যাথা দূর করার জন্য ওষুধ না খেয়ে ঘরোয়া বা প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে দূর করা সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত হবে।

কেননা ওষুধের মধ্যে ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। তাই আজ আমি দ্রুত পেট ব্যাথা কমানোর উপায় বলবো।

আশা করি এই উপায় গুলো ফলো করলে ১০০% খুব সহজে আপনার পেট ব্যথা দূর হয়ে যাবে। পাশাপাশি আপনার শরীরের কোন ধরনের ক্ষতি হবে না। চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

দ্রুত পেট ব্যাথা কমানোর উপায়

দ্রুত পেট ব্যাথা কমানোর উপায়

এখানে আমি এমন কিছু উপায় তুলে ধরবো যে উপায় গুলো ফলো করলে ১০০% আপনার পেট ব্যথা দ্রুত কমে যাবে।

উপায় বলার আগে কি কি কারনে পেট ব্যাথা হয়ে থাকে সে সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে আপনার কি সমস্যার কারণে পেট ব্যাথা হচ্ছে তা খুব সহজেই বের করতে পারবেন ।

কি কি কারনে পেট ব্যাথা হয়ে থাকে ?

অনেকগুলো কারণে পেট ব্যথা হয়ে থাকে। আমি নিচে কয়েকটি কারন তুলে ধরলাম।

  • বদহজম এই কারণে পেট ব্যথা হতে পারে।
  • গ্যাসের কারণে হতে পারে।
  • এসিডিটি এর কারণে হতে পারে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণেও পেট ব্যথা হতে পারে।

উপরে উল্লেখিত কারণ গুলোর কারণে পেট ব্যথা হলে সর্বপ্রথম ব্যথা দূর করার জন্য প্রাকৃতিক উপায় চেষ্টা করবেন।

  • ভাইরাসজনিত কারণে কোন ইনফেকশন হলে পেট ব্যাথা হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে এবং অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।
  • এপিনডিসাইটিস কারণে পেট ব্যথা হতে পারে। বুঝার মাধ্যম হলো : যদি ব্যথা নাভীর মাঝখান থেকে শুরু হয়ে তলপেটের ডান দিকে যেতে থাকে। অর্থাৎ তলপেটের ডান দিকে ব্যথা করে । পাশাপাশি বমি হয় এবং জ্বর আসে। তাহলে এক্ষেত্রে এপিনডিসাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৯০%। তাই খুব দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে।
  • কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণেও পেট ব্যথা করে। বুঝার মাধ্যম হলো : তলপেটে ব্যথা করবে । ধীরে ধীরে এর ব্যথা বাড়তে থাকবে। পাশাপাশি অধিকাংশ ক্ষেত্রে জ্বর আসতে পারে। তাই এক্ষেত্রেও ডাক্তার দেখাতে হবে।
  • নিয়মিত পেট ব্যথা করলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে এবং ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

প্রকৃতিক মাধ্যমে পেট ব্যাথা কমানোর উপায়

এখানে আমি এমন ১০টি উপায় তুলে ধরবো যে উপায় গুলো ফলো করলে ১০০% আপনার পেট ব্যথা দ্রুত কমে যাবে।

১. পুদিনা পাতার মাধ্যমে

পুদিনা পাতার মধ্যে রয়েছে ব্যাথা দূর করার বৈশিষ্ট্য। তাই পেট ব্যথা দেখা দিলে এবং বমি বমি ভাব দেখা দিলে দুইটি উপায়ে পুদিনা পাতা খেলে আশা করি পেট ব্যথা কমে যাবে।

  1. কয়েকটি পাতা নিয়ে তা ধৌত করে চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন।
  2. চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে পুদিনা পাতা খেতে পারেন।

এই দুইটি উপায়ে পুদিনা পাতা খাওয়ার মাধ্যমে আপনার ব্যথা খুব দ্রুত দূর হয়ে যাবে ।

২. আদা খেতে পারেন

আদা এর মধ্যে রয়েছে ব্যাথা দূর করার বৈশিষ্ট্য । প্রাচীনকালের মানুষ পেটে ব্যথা দূর করার জন্য আদা ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করত। আদা দুইভাবে ব্যবহার করা যায়।

  1. সরাসরি আদা কেটে তা চিবিয়ে খেতে পারেন।
  2. রং চায়ের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।

এই দুইটি উপায়ে আদা খাওয়ার মাধ্যমে আপনার পেটের ব্যথা কমে যাবে।

৩. ভাত খেতে পারেন

ভাতের মধ্যে রয়েছে নানান উপকারিতা। তাই পেট ব্যথা করলে পেট ভরে ভাত খাবেন। তবে ভাতের সাথে তেল জাতীয় এবং বেশি মসলা জাতীয় কোন তরকারি খাবেন না।

হালকা জাতীয় তরকারি দিয়ে ভাত খাবেন। আশা করি আপনার পেট ব্যাথা দ্রুত নিরাময় হবে।

৪. হিটিং প্যাড ব্যবহার করতে পারেন

যখন আপনার পেট ব্যথা করবে তখন সেই ব্যাথার স্থানে হালকা গরম হিটিং প্যাড ব্যবহার করতে পারেন।

যদি আপনার কাছে হিটিং প্যাড না থাকে তাহলে হালকা গরম পানি একটি বোতলে প্রবেশ করিয়ে অথবা একটি ব্যাগের প্রবেশ করিয়ে ওই ব্যথার স্থানে ধরতে পারেন।

আশা করি খুব সহজেই আপনার পেটের ব্যথা ভালো হয়ে যাবে।

৫. কলা খেতে পারেন

কলার মধ্যে রয়েছে অনেক ফাইবার। বেশি পরিমাণ ফাইবার থাকার কারণে কলা নানান কাজে আসে। তাই যখন পেট ব্যথা করবে তখন কলা খাবেন। আশা করি আপনার পেট ব্যথা ভালো হয়ে যাবে।

৬. আপেল খেতে পারেন

আপেলের মধ্যে রয়েছে অনেক ফাইবার। তাই যখন পেট ব্যথা করবে তখন আপেল খাবেন। আশা করি আপনার পেট ব্যথা ভাল হয়ে যাবে। পাশাপাশি আপেল খেলে ডায়রিয়া ও বমি ভাব দূর হয়েছে।

৭. পানি খেতে পারেন

যখন আপনার পেট ব্যথা করবে তখন বেশি পরিমাণ পানি পান করুন। পানির মধ্যে রয়েছে নানান উপকার। আশা করি আপনার পেট ব্যাথা খুব সহজে ভালো হয়ে যাবে।

৮. কিসমিস খেতে পারেন

পেট ব্যথা করলে কিসমিস খেতে পারেন। কিসমিস নানান কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। কেননা কিসমিসের মধ্যে রয়েছে নানান উপকার। বিশেষ করে কিসমিস গ্যাসের সমস্যাকে দূর করা যায়।

কিসমিস খাওয়ার উপায় হল : রাতের বেলায় ২০- ২৫ টি কিসমিস ভিজিয়ে রাখবেন তারপর সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ভিজিয়ে রাখা কিসমিস খাবেন। আশা করি আপনার গ্যাসের প্রবলেম দূর হয়ে যাবে।

৯. জিরা খেতে পারেন

পেট ব্যথা করলে জিরা খেতে পারে। কেননা জিরার মধ্যে রয়েছে অনেক বৈশিষ্ট্য। রান্নার কাজে ব্যবহার হয় মসলা হিসাবে। পাশাপাশি আরো কয়েকটি কাজে ব্যবহার হয় । যেমন :

  • জিরা খেলে বদ হজম দূর হয়ে যায় ‌
  • গ্যাসের সমস্যা দূর হয়ে যায়
  • পেটের ব্যাথা দূর হয়ে যায়।

তাই এসব সমস্যার ক্ষেত্রে চিবিয়ে চিবিয়ে জিরা খেতে পারে। আশা করি আপনার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

১০ . ত্রিফলা খেতে পারে

ত্রিফলা খেলে পেট ব্যথা দূর হয়ে যাবে। পাশাপাশি ত্রিফলা খেলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে।

ত্রিফলা খাওয়ার নিয়ম হলো : রাত্রে ঘুমানোর আগে এক চামচ ত্রিফলা হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খাবেন।

বাচ্চাদের পেট ব্যাথা কমানোর উপায়

শিশুদের পেটের ব্যথা নানান কারণে হতে পারে। যেমন :

১. কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে

অর্থাৎ : কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে শিশুদের পেট ব্যথা হতে পারে।

এক্ষেত্রে করণীয় হলো : নরম জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। পাশাপাশি সাইকেলের মত শিশুর দুই পা নাড়াচড়া করানোর মাধ্যমে ব্যায়াম করানো। আশা করি এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

২. গ্যাসের কারণে

গ্যাসের কারণে শিশুদের পেট ব্যাথা হতে পারে।

এক্ষেত্রে করণীয় হলো : শিশুর পিঠ এবং বুক মালিশ করতে পারবেন। পাশাপাশি তলপেটের দিকে চেপে ধরতে হবে।

আশা করি এভাবে শিশুর পেট ব্যথা চলে যাবে। তবে যদি ক্রমান্বয়ে পেট ব্যথা বাড়তে থাকে তাহলে ডাক্তার দেখাতে হবে।

৩. খাবারের কারণে পেট ব্যথা হতে পারে

অর্থাৎ গুঁড়ো দুধ অথবা গরুর দুধ খাওয়ার কারণে পেট ব্যথা হতে পারে। কেননা গুঁড়ো দুধ এবং গরুর দুধের মধ্যে এলার্জি রয়েছে। তাই অবশ্যই খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।

৪. ইনফেকশনের কারণে পেট ব্যথা করতে পারে

অনেক সময় বিভিন্ন ভাইরাস জনিত কারণে ইনফেকশন দেখা দেয়। ফলে পেট ব্যথা করতে থাকে। পেট ব্যথা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।

এক্ষেত্রে করণীয় হলো : ডাক্তার দেখান। আশা করি সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে পেট ব্যথা ভালো হয়ে যাবে।

৫. বাতাস গিলে ফেলার কারণে 

অর্থাৎ বাচ্চাকে খাওয়ানোর সময় অনেক ক্ষেত্রে বাতাস গিলে ফেলে। ফলে বাতাস ভিতরে আটকে গিয়ে পেট ব্যথা করতে থাকে।

এক্ষেত্রে করণীয় হলো : শিশুকে খাওয়ানোর সময় সোজা করে রাখুন এবং প্রত্যেকবার খাওয়ানের পরে ধীরে ধীরে তার পেটে এবং পিঠে হালকা টোকা দেন।

পরিশেষে বলবো : উপরে দ্রুত পেট ব্যাথা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।

আশা করি আপনি খুব সহজেই উল্লেখিত আলোচনা থেকে অনেক উপকৃত হয়েছে। তাই অবশ্যই আপনার মূল্যবান কমেন্ট করে জানাবেন।

পাশাপাশি আপনি আপনার বন্ধুবান্ধবদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন : 

আমি সব সময় নতুন কিছু শিখতে এবং তা ছড়িয়ে দিতে পছন্দ করি। তাই অনলাইন ব্যবসা ,অনলাইন ইনকাম , ব্লগিং এবং তথ্য- প্রযুক্তি বিষয়ক নানান নতুন বিষয় তুলে ধরাই হলো আমার মূল লক্ষ্য।

Leave a Comment