এলার্জি দূর করার উপায় কি ?

 আপনি কি জানতে চান এলার্জি দূর করার উপায় কি ? এলার্জি খুবই পরিচিত একটি শব্দ। যা কমবেশি সবাই শুনেছি। তবুও এটা সম্পর্কে সার্বিক ধারণা থাকা সবার জন্য অতি জরুরী।

কেননা এলার্জির কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ যেমন: শ্বাসকষ্ট, চর্ম, একজিমা ইত্যাদি হয়ে থাকে। আজ আমরা এলার্জি দূর করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জি দূর করার উপায়

১০টি উপায় আলোচনা করব । উপায় বলার আগে এলার্জি নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিব । এগুলো ফলো করলে খুব সহজেই আপনি এলার্জি দুর করতে পারবেন ।

এলার্জি কি

এলার্জি এটি একটি গ্রিক শব্দ যা Allos ও Ergos এর সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। অর্থ হলো: পরিবর্তিত প্রতিক্রিয়া। ধুলোবালি, ফুলের রেণু, নির্ধারিত কিছু খাবার,

বিশেষ কিছু ঔষধ ইত্যাদি এর ফলে শরীরে প্রদাহজনিত যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় তাকে এলার্জি বলে অভিভূত করা হয়।
আমাদের শরীরে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে, সেটার যদি কোনো কারণে কার্যকারিতা কমে যায়, তখন এলার্জির বহিঃপ্রকাশ হয়।

এলার্জি কখন হয় ?

বেশ কয়েকটি কারণে শরীরে এলার্জি রোগ তৈরি হয়। তার মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হলো ধুলোবালি। চলাফেরা করার সময় রাস্তাঘাটে বা ঘরবাড়ি ঝাড়ু দেওয়ার সময় আমাদের শরীরের যে ধুলোবালি স্পর্শ করে সেখান থেকেই এলার্জি রোগ তৈরি হয়।

ধুলোবালিতে মাইটি নামক এক ধরনের জীবাণু থাকে, যা শতকরা প্রায় 60 পার্সেন্ট অ্যালার্জির জন্য দায়ী। এছাড়া দূষিত বাতাস ,কাঁচা রঙ্গের গন্ধ, ফুলের রেনু ইত্যাদি থেকেও এলার্জি রোগের উৎপত্তি হয়।

আমরা জ্বর, মাথাব্যথা , কাশি ইত্যাদি। রোগের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই পেনিসিলিনের ইনজেকশন , যা ঘটনাস্থলে খুব বিপদজনক প্রতিক্রিয়া,অ্যাসপিরিন, সালফার ঔষধ খেয়ে থাকি বা ব্যবহার করি।

যার ফলে আমাদের শরীরে এলার্জি তৈরি হয়। মাত্রাতিরিক্ত আহারে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। অতএব কোনো ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ গ্রহন করা যাবে না।

যে সমস্ত খাবার আহার করার কারণে শরীরে এলার্জি রোগের উৎপত্তি হয় 

সেগুলো হলো: বেগুন, চিনাবাদাম, কাঠবাদাম, আখরোট ,পাইন বাদাম, তিল, মাছ যেমন চিংড়ি শামুক, কাঁকড়া, ইলিশ , গরুর গোশত, হাঁসের ডিম ইত্যাদি।

এলার্জি রোগের আক্রান্ত হওয়ার আলামত সমূহ হলো:

চুলকানি, ফুসকুড়ি, জল্যুক্ত চোখের চুলকানি, বারবার হাঁচি দেওয়া, নাক চুলকানো, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, নাক দিয়ে পানি পড়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, কাশি, চামড়ায় লাল লাল চাকা হয়ে ফুলে ওঠা। চোখ, মুখ বা জিহ্বা ফুলে যাওয়া। ডায়রিয়া, শ্বাসজনিত সমস্যা ইত্যাদি।

এলার্জি দূর করার উপায় :

১. তুলসী পাতা ।

সামান্য তুলসী পাতা পিষে নিন, অতঃপর এক চামচ অলিভ অয়েল তেল, সামান্য কালো মরিচ, এক চিমটি লবণ এবং দুই কোয়া রসুন সবগুলোকে একসঙ্গে ভালো করে মিশ্রিত করুন।

অতঃপর শরীরের যে অংশে এলার্জি সেখানে লাগিয়ে দিন। শুকানোর বেশ কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন, উপকার পাবেন বলে আশা রাখি।

২. এলার্জি দূর করার উপায় হলো অ্যাপেল সিডার ভিনেগার। 

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার রোগের জন্য আশ্চর্য নিরাময় করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যাসিটিক এসিড রয়েছে যা শক্তিশালী এন্টিমাইক্রোবিয়াল এবং এন্ট্রি ইনফ্লামেটরি বিশিষ্ট যুক্ত।

এই দুটি সমন্বিত বিভিন্ন ধরনের ত্বকের এলার্জিতে জড়িত র্যাশ গুলিকে চিকিৎসা করতে সহায়তা করতে পারে।
ব্যবহারবিধি: এক কাপ গরম পানিতে 1 টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার ভালোভাবে মিশ্রিত করুন। এরপর এক টুকরো তুলোর বল বেশ কিছুক্ষণ সময় ভিজিয়ে রাখুন।

অতঃপর আক্রান্ত স্থানে সেই তুলার বল দিয়ে ছড়িয়ে দিন। শুকানোর 15 থেকে 20 মিনিট পরে ভালো পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এলার্জি নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত দিনে 2 বার ব্যবহার করুন।


৩. অ্যালোভেরা।

অ্যালোভেরা জিল প্রাকৃতিক ঔষধি এবং anti-inflammatory বৈশিষ্ট্যগুলির কারণে অনেক প্রাকৃতিক নিরাময়ের প্রস্তুতিতে ব্যবহার হয়। এটি পুনরুদ্ধার প্রতিক্রিয়াটিকে গতি দেয় এবং অনেক স্বস্তি দেয়। এটি ত্বকের এলার্জি অন্যতম একটি সেরা প্রতিকার।


ব্যবহারবিধি: পাতা থেকে এক চামচ জেলটি বের করুন অথবা কিনে নেওয়া অ্যালোভেরা পণ্য থেকে 1 চা চামচ জেলটি বের করুন। এবং এলার্জি দ্বারা আক্রান্ত স্থানে অ্যালোভেরার সেই জেলটি লাগিয়ে দিন। 30 মিনিট পর্যন্ত লাগিয়ে রাখুন। অতঃপর ধুয়ে ফেলুন।


৪. চা পান করুন

তুলসী পাতা, আদা, লবঙ্গ, চিনি এবং সেইসঙ্গে কালো মরিচ এই পাঁচটি উপাদান মিশ্রিত করে চা পান করুন। অতি সহজেই এলার্জি কমতে শুরু করবে।


৫. মিশ্রিত করে পান করা

শসার রস 100 মিলি, বিটরুটের রস 100 মিলি, এবং গাজরের রস 100 মিলি এই তিনটি একসঙ্গে মিশ্রিত করে পান করলে, এলার্জির পরিমাণ অনেকটা লাঘব হবে।


৬. এলার্জি দূর করার উপায় হলো কমলা ফল। 

অনেক সময় পাকস্থলীতে খুব বেশি পরিমাণ প্রোটিন এর আধিক্য হলে এলার্জির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে ভিটামিন সি জাতীয় খাদ্য বেশি পরিমাণ খেতে হবে। আর কমলা পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন জাতীয় একটি ফল।

এলার্জির প্রাদুর্ভাব লাঘব করতে আপনাকে দৈনন্দিন দুই থেকে তিনটি কমলা খেতে হবে।


৭. দুই তিন কেজি নিম পাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন

শুকানো নিমপাতা পাটায় পিষে গুঁড়া করুন। তা ভালো কোন কোঠায় রেখে দিন। প্রতিদিন 1 চা চামচ সেই গুঁড়ো নিম পাতা এবং 1 চা চামচ ইসবগুলের ভুষি এক গ্লাস পানিতে ভালো করে মিশ্রিত করে 25 থেকে 30 মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। অতঃপর সেটা পর সেটা পান করুন।


৮. এলার্জি দূর করার উপায় হলো কোল্ড শাওয়ার নিন

কোল্ড শাওয়ার আপনার যখন শরীরে এলার্জি খুব যন্ত্রণা দিবে। শরীরে খুব চুলকানি অনুভব করবেন, তখন কোল্ড শাওয়ার নিন, যা এলার্জি কমাতে সহায়তা করবে।

আপনি যখন ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করবেন বা শাওয়ার নিবেন তখন আপনার রক্তনালী সংকুচিত হবে না। এবং হিস্টামিন বের হবে না। ফলে এলার্জির তীব্রতা এবং শরীরের জ্বালা পোড়া কমে যাবে।


৯. ফলের রস মিলিয়ে পান করুন

সকাল বেলা খালি পেটে 5 থেকে 7 ফটো কাস্টার ওয়েল এবং তার সঙ্গে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কোন ফলের রস মিলিয়ে পান করুন। ফলের রস ছাড়াও পানি মিশ্রিত করে পান করতে পারেন, এটি ত্বক এবং নাকের এলার্জির তীব্রতা লাঘব করতে সহায়তা করে।


১০. এলার্জি দূর করার উপায় হলো তুলসী

পাতাতুলসী পাতা তে রয়েছে ব্রেড স্পেক্ট্রাম অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল, যা ত্বককে কার্যকরভাবে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। তুলসী পাতা তে আরো রয়েছে আন্টি ইনফ্লামেটরি যা ফুলে যাওয়া এবং চুলকানি লাঘব করে।


ব্যবহারবিধি: একমুঠো তুলসীপাতা ভালো করে ধুয়ে নিন। অতঃপর সেই পাতাগুলো পাটায় পেস্ট করুন বা ব্লেন্ডারে পিষে নিন। অতঃপর পিষে নেওয়া পাতা এলার্জি আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে দিন। লাগানোর 30 মিনিট পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

পরিশেষে বলব : উপরে এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

যদি এলার্জি সম্পর্কিত আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে। তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন : 

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment