উকুন দূর করার উপায় ৭টি

আপনি জানতে চান  উকুন দূর করার উপায় ? উকুন এক ধরনের পরজীবী পোকা। যা মাথা, ত্বক, ঘাড় এবং চুলের সঙ্গে লেগে থাকে। এদের খাবার হচ্ছে মানুষের রক্ত। এদের আকার একটি তিল বিচ সমপরিমাণ হয়। এরা একজনের মত থেকে অপর জনের মাথায় অতি সহজে চলে যেতে পারে।

ইংরেজিতে উকুন আক্রান্ত হওয়া কে পেডিকুলোসিস বলে। থিরাপটেরা বর্গভুক্ত রক্তচোষা উকুনের আক্রমণকে পেদিকুলোসিস বলে। যা মানুষ সহ গরম রক্ত বিশিষ্ট যেকোনো স্তন্যপায়ী এবং পাখি উকুনে আক্রান্ত হয়।

মাথায় উকুন আসার পর 7 থেকে 10 দিনের মধ্যে ডিম পারতে শুরু করে। এরপর উকুন বড় হতে 10 দিন সময় লাগে। একসঙ্গে ডিম থেকে উকুন বড় হওয়ার কারণে অতি দ্রুত চুলে উকুন ছড়িয়ে পড়ে। উকুনের ডিম কে নিট বলে, যা থেকে একটি বাচ্চার জন্মে, পরে সেটা সম্পূর্ণ বয়স্ক উকুনের পরিণত হয়।

উকুন প্রতিরাতে একাধিকবার খাদ্য গ্রহণ করে। সুচের মতো মুখ উপাঙ্গ ব্যবহার করে তারা মানুষের মাথার চামড়া ছিদ্র করে রক্ত খায়। রক্ত খাওয়া অবস্থায় তাদের লালা মানুষের শরীরে প্রবেশ করে, এতে চুলকানি সৃষ্টি হয়, এছাড়া ত্বকে স্পট, লাল হয়ে ফুলে যাওয়া, ঘায়ের সৃষ্টিও হতে পারে। তারা মানুষের মাথায় গর্ত করতে পারে না।

উকুনের অত্যাচার অতিষ্ঠ হয়ে আমরা অনেকেই বিভিন্ন রকমের উকুন নাশক প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি, দেখা যায় উকুন নাশক বিভিন্ন শ্যাম্পু বা ওষুধ ব্যবহার করা পারে, তাৎক্ষণিকভাবে চলে যায়, কিন্তু কয়েকদিন পরে আবার দেখা দেয়।

এছাড়া বাজারে প্রাপ্ত বিভিন্ন উকুন নাশক প্রসাধনীতে রয়েছে নানা রকমের রাসায়নিক দ্রব্য, যা চুল এবং ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকারক, সাবধান ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কোন রকমের উকুন নাশক প্রসাধনী ব্যবহার করবেন না।

তো চলুন জেনে নেওয়া যাক ঘরোয়া পদ্ধতিতে উকুন দূর করার উপায় । এ ব্যপারে বিস্তারিত আলোচনা করব ।

উকুন দূর করার উপায়
উকুন দূর করার উপায়

উকুন দূর করার উপায়

উপায় বলার আগে আমি আলোচনা করব, কয়েকটি এমন কারণ, যার কারণে মাথায় উকুনের আবির্ভাব হয় অর্থাৎ উকুন তৈরী হয় ।

  • ভেজা চুল দীর্ঘ সময় বেঁধে রাখা ।
  • মাথা অপরিষ্কার রাখার ।
  • অন্যের চিরুনি, তোয়ালে/গামছা ব্যবহার করার দ্বারা ।
  • অন্যের মাথা থেকে ।

এ সমস্ত বিষয় অবশ্যই আপনাকে ভালো ভাবে স্বরণ রাখতে হবে ।

মাথার উকুন দূর করার উপায় সমূহ:

১. নারিকেল তেল ব্যবহার করা

খুব সহজ পদ্ধতিতে মাথার উকুন দূর করার জন্য নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন, যা প্রাকৃতিকভাবে উকুন দূর করার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী। দ্রুত উপকারিতা পেতে নারিকেল তেলের সঙ্গে টি ট্রি অয়েল কিংবা লবঙ্গের বিস্তৃত করে নিতে পারেন। তাতে তবে অপকারিতা পাওয়ার প্রথম শর্ত হলো : খাঁটি নারিকেল তেল হতে হবে।

২. নিম তেল

দ্রুত উকুনের কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হল নিম তেল ব্যবহার করা। নিম তেল ব্যবহারের ফলে অতি সহজে উকুন মরে যাবে।

ব্যবহারবিধি:

গোসলের শ্যাম্পু ব্যবহার করার সময়, প্রথমে শ্যাম্পু হাতে ঢালুন, তার সঙ্গে সামান্য পরিমাণে নিম তেল ঢালুন, এরপর উভয়টি কে ভালোভাবে মিশ্রিত করুন এবং মাথায় ব্যবহার করুন। গোসলের পর এখনো চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে নিলেই চলে যাবে উকুন এবং তার ডিম। দ্রুত উকুন দূর করার জন্য ঘরোয়া পদ্ধতিতে অবলম্বন করতে পারেন।

৩.দ্রুত উকুন দূর করার উপায় হলো লেবুর রস ব্যবহার

লেবুর রস উকুন দূর করার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। লেবুতে রয়েছে জীবাণুনাশক ,যা খুব দ্রুত উকুন দূর করে।

ব্যবহারবিধি: 

প্রথমে লেবুর রস বের করে নিন, এরপর সেটিকে সরাসরি মাথায় লাগান এবং 30 থেকে 40 মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এরপর তখনো চিরুনির এর মাধ্যমে চুল আঁচড়ে নিন, এতে অতি সহজে উকুন চলে যাবে।

৪. পেঁয়াজের রস

চুলকে উকুনন মুক্ত করতে পেঁয়াজের রস ব্যবহার করতে পারেন। যা খুবই কার্যকারি ভূমিকা প্রদর্শন করে।

ব্যবহারবিধি:

আপনার মাথা আকার অনুপাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পেঁয়াজ থেঁতো করে নিন, এরপর সেই থেঁতো করা বি আজকে মাথায় লাগিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করুন।

চুলের গোড়ায় ভালো ভাবে পৌঁছান। বেশ কিছু সময় চুলকে ঢেকে রাখুন, এরপর সামান্য কুসুম গরম পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। মাথা ধোয়া হয়ে গেলে, ভালোভাবে মাথাকে পানিমুক্ত করুন। এরপর চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে নিন। এতে খুব সহজে উপকারিতা উপভোগ করবেন।

৫. চুলের উকুন দূর করার উপায় হলো রসুন ব্যবহার

রসুন‌ও চুল থেকে উকুন দরকার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। দ্রত মাথা থেকে উকুন দূর করার জন্য লোশন ব্যবহার করতে পারেন।

ব্যবহারবিধি: 

প্রথমে দশ বারোটা রসুনের কোয়া থেঁতো করে নিন, তার সঙ্গে দুই চামচ লেবুর রস মেশান, এরপর উভয়টি কে একসঙ্গে ভালোভাবে পেস্ট করুন, এবং মাথার ত্বকে ভালো ভাবে লাগিয়ে দিন। যাতে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে পৌঁছায়। এভাবে অর্ধ ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। অতি সহজে উপকারিতা পাবেন।

৬. মেয়োনিজ

উকুন দূর করতে কার্যকর মেয়োনিজ। ব্যবহারবিধি: রাতে ঘুমানোর পূর্বে, মেয়োনিজ, সাদা ভিনেগার এবং টি ট্রি অয়েল কয়েক ফোটা দিয়ে, সবগুলোকে একসঙ্গে ভালোভাবে মিশ্রিত করা এবং চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন। 12 ঘন্টা বেশি সময় লাগিয়ে রাখতে পারলে ভালো। এরপর সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে নিবেন। এতে খুব সহজেই আপনি উকুন থেকে মুক্তি পাবেন।

৭. উকুন দূর করার উপায় হলো চিকন দাঁতের চিরুনি ব্যবহার

সবচেয়ে সহজ পদ্ধতিতে মাথা থেকে উকুন দূর করতে চাইলে, চিকন দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করতে পারেন। প্রাচীন যুগে মিশরীয়রা কাঠের তৈরি চিকন দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করত উকুন দূর করার জন্য। শাওয়ার নেওয়ার করবে শ্যাম্পু করে চিকন দাঁতের চিরুনি দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ চুল আঁচড়ে নিন। এতে দেখবেন অতি সহজে আপনার চুল উকুন উন্মুক্ত হয়ে গেছে।

পরিশেষে বলব : উকুন দূর করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। যদি আমার লেখা ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই জানাবেন। ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন : 

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment