অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

আপনি কি অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করতে চাচ্ছেন ? পাসপোর্ট অনেক প্রয়োজনীয় বিষয়। বিশেষ করে বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক প্রয়োজন পড়ে। এতটাই প্রয়োজনীয় জিনিস যে, এটা ছাড়া আপনি বিদেশে যেতে পারবেন না। নদীপথে হোক , ট্রেনযোগে হোক অথবা বিমানপথে হোক সবক্ষেত্রেই এই

পাসপোর্ট প্রয়োজন পড়বে । পাসপোর্ট 3 ধরনের হয়ে থাকে।

  • হাতে লেখা পাসপোর্ট । এটা মূলত আগের যুগের পাসপোর্ট। 2015 সালের পর থেকে এই পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়নি।
  • এমআরপি পাসপোর্ট । এটা হল এমন একটি পাসপোর্ট যা যন্ত্র বা মেশিনের মাধ্যমে সনাক্ত করা হয়। এটা মূলত এসেছিল হাতের লেখা পাসপোর্ট এর পরিবর্তে। এই পাসপোর্ট এর প্রচলন শেষ হয়ে গেছে বর্তমানে।
  • ই-পাসপোর্ট। ই-পাসপোর্ট মূলত চালু হয়েছে 2020 সালের 22 শে জানুয়ারি থেকে। আর এই পাসপোর্টটি এসেছে এমআরপি পাসপোর্ট এর পরিবর্তে।

ই-পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে প্রচলিত হলো ই-পাসপোর্ট। অতএব আজ আমি অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করা অর্থাৎ ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। যাতে করে সকলের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায়। কোন ধরনের ঝামেলা না থাকে।

অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন
অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন

অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন

অর্থাৎ এখানে আমি আলোচনা করব ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে। ই-পাসপোর্ট করার জন্য আপনাকে আগে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র একত্র করতে হবে। সেই প্রয়োজনীয় কাগজ গুলো হল :

  • পাসপোর্ট সাইজের দুইটি ছবি রাখতে হবে
  • ই পাসপোর্ট আবেদন এর একটি প্রিন্ট কপি লাগবে
  • ভোটার আইডি কার্ড এর একটি কপি লাগবে
  • ভোটার আইডি কার্ড যদি না থাকে তাহলে জন্ম নিবন্ধন এর একটি কপি লাগবে।
  • আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ লাগবে
  • আগে যদি পাসপোর্ট করে থাকেন তাহলে সে পাসপোর্ট এর ডাটা পেইজের কপি লাগবে।
  • অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর পিন্ট কপি লাগবে
  • নাগরিক সনদ লাগবে।
  • পেশাগত সনদের সত্যায়িত একটি ফটোকপি লাগবে যদি সেটা থাকে‌।

এভাবেই আপনি অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন ।

ই-পাসপোর্টের সুবিধা সমূহ

ই-পাসপোর্ট অত্যাধুনিক। এর সুবিধা অনেক বেশি আগের পাসপোর্ট এর তুলনায়। যেমন :

  • দ্রুত ইমিগ্রেশন পার হতে পারবেন। কেননা আগের পাসপোর্ট দিয়ে ইমিগ্রেশন এর ক্ষেত্রে অনেক ঝামেলা হয়ে থাকত। পাশাপাশি অনেক সময় লাগতো ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার জন্য। কিন্তু এই ই-পাসপোর্ট এক্ষেত্রে ইমিগ্রেশন টা খুব দ্রুত হয়ে যাবে।
  • ই পাসপোর্ট এর মূল লক্ষ্য হলো নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যাতে করে কোন ধরনের জালিয়াতি না হয়।
  • এটার মধ্যে রয়েছে প্রায় 38 ধাপের নিরাপত্তা

ইত্যাদি আর নানান ধরনের সুবিধা রয়েছে।

অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

আপনি নিজে নিজেই কোন ধরনের দালাল ছাড়া পাসপোর্ট এর জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এর এর জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম ই পাসপোর্ট এর ফরম পূরণ করতে হবে।

ফরম পূরণ করার জন্য কিছু নিয়ম রয়েছে ।

  • আপনি ইচ্ছা করলে সরাসরি অনলাইনে ই-পাসপোর্ট পূরণ করতে পারবেন। অথবা পিডিএফ আকারে ডাউনলোড করে পূরণ করতে পারবেন।
  • আপনার নাম জন্মতারিখ ইত্যাদি সমস্ত বিষয় ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী দিবেন। আর যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ড না থাকে তাহলে জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী দিবেন।
  • যাদের ভোটার আইডি কার্ড নাই তারা অবশ্যই জন্ম নিবন্ধন এর সাথে সাথে পিতা-মাতার আইডি কার্ড নাম্বার দিবেন।
  • ই পাসপোর্ট আবেদনের সময় কোন কাগজপত্র প্রয়োজন হবে না।
  • তারকা চিহ্নিত ক্রমিক নাম্বার গুলো অবশ্যই পূরণ করবেন।

ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

সর্বপ্রথম আপনাকে epassport.gov.bd নামক সাইটে প্রবেশ করতে হবে। উপরে ভাষা পরিবর্তন করার অপশন রয়েছে ইচ্ছা করলে আপনি বাংলা ভাষায় করে নিতে পারেন।

আবেদন করার জন্য পাঁচটি ধাপ রয়েছে। পাঁচটি ধাপ দেখতে পারেন। তবু আমি সংক্ষেপে বলে দিচ্ছি

  • বর্তমানে বসবাসরত এলাকায় ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু হয়েছে কিনা দেখুন
  • ফরম পূরণ করুন অনলাইনে
  • পাসপোর্ট ফি পরিশোধ
  • বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ফিংগার দেওয়ার জন্য অফিসে যেতে হবে।
  • পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করা।

আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই ধাপগুলো আপনাকে মনে রাখতে হবে।

বিস্তারিতভাবে অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম

আবেদন করার জন্য প্রথমে আপনি epassport.gov.bd নামক ওয়েব সাইটে প্রবেশ করুন বা প্রথম পেজে যান। Apply online লেখা দেখতে পারবেন। আপনি যেখানে বসবাস করেন সেই স্থানটি দিবেন।

এরপর continue বাটনে ক্লিক করবেন। তারপর আপনার ইমেইল এড্রেস টা দিবেন। এরপর আবার continue বাটনে ক্লিক করুন। এরপর আপনার নাম মোবাইল নাম্বার পাসওয়ার্ড এগুলার ইত্যাদি দিবেন। আপনি যে ইমেইল এড্রেস দিয়েছিলেন সেখানে একটি কনফার্ম করার জন্য মেসেজ পাঠাবে যে সেখানে কনফার্ম অপশনে ক্লিক করবেন।

এভাবে আপনার একাউন্ট হয়ে যাবে। এরপরে লগিন অপশন এ ক্লিক করুন। আপনার ইমেইল এড্রেস আর পাসওয়ার্ড দিয়ে

লগইন করুন।

আপনিকে দ্বিতীয় স্টেপে নিয়ে যাবে। আপনার যদি আগে পাসপোর্ট থাকে তাহলে yes দিবেন অন্যথায় no দিবেন। এরপর সেভ এবং কন্টিনুয়ে বাটনে ক্লিক করবেন।

এরপর আপনাকে আরেকটি স্টেপে নিয়ে যাবে। এখানে আপনি আপনার এড্রেস গুলো ঠিকভাবে লিখবেন। যদি আপনার বর্তমান এড্রেস এবং আগের অ্যাড্রেসটা এক হয় তাহলে নিচের খালি বক্স এ টিক দিন।

এরপর সেভ এবং কন্টিনুয়ে বাটনে ক্লিক করুন। এরপর আপনাকে আর একটি পেজে নিয়ে যাবে। সেখানে পিতা-মাতা , স্বামী বা স্ত্রীর নাম জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী।

এরপর আপনার পিতা-মাতা , ভাই-বোন বা অন্য কারো ঠিকানা মোবাইল নাম্বার দিন। এরপর আপনার পাসপোর্ট এর ধরন বর্ণনা করুন। সর্বশেষে সমস্ত শব্দ তথ্যগুলো ঠিক আছে কিনা দেখে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।

এভাবে আপনি অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করতে পারেন।

পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করা

আপনাকে ফি অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। ইচ্ছা করলে আপনি সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে পরিশোধ করতে পারেন। অথবা অনলাইনের মাধ্যমেও করতে পারেন।

আমি যখন অনলাইনের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করবেন। তখন আপনার আবেদনের সারাংশের মধ্যে আপনার পরিশোধকৃত টাকার পরিমাণ অটোমেটিকভাবে যোগ হয়ে যাবে।

যদি জোগ না হয় তাহলে অবশ্যই আপনার পরিশোধকৃত টাকারকার কপিটি সঙ্গে রাখবেন। যখন আপনি বায়োমেট্রিক আবেদনের জন্য যাবেন তখন সেই স্লিপটি বা সেই কপিটি জমা দিবেন।এভাবে আপনারা প্রায় 3 টি স্টেপ পূর্ণ হয়ে যাবে।

ই-পাসপোর্ট এর জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন অর্থাৎ চতুর্থ স্টেপ পূর্ণ করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হবে। তারপর আপনি চতুর্থ স্টেপ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ফিংগার দেওয়া। এই স্টেপটি পূর্ণ করবেন সরাসরি অফিসে যেয়ে। ও পাসপোর্ট সংগ্রহ করা।

পরিশেষে বলব : উপরে অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আপনার উপকার হয়ে থাকে তাহলে জানাবেন। ধন্যবাদ।

আরো পড়ুন : অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম

I always like to learn new things and spread them. Therefore, my main goal is to highlight various new topics related to online business, online income, blogging and information technology.

Leave a Comment